লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহ জানিয়েছে, তারা ইসরাইলে আবারও দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে ড্রোন ও রকেট দিয়ে সিরিজ হামলা চালিয়েছে সংগঠনটি। তবে এখানেই শেষ নয়। আরও হামলা আসছে। তাদের এক শীর্ষ কমান্ডারকে গত সপ্তাহে হত্যা করেছে ইসরাইল। এর কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে এই সশস্ত্র গোষ্ঠী। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
হিজবুলস্নাহ জানিয়েছে, ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে আকরির কাছে দুটি সামরিক ঘাঁটিসহ বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া ইসরাইলের অপর একটি স্থানে সামরিক বাহিনীর একটি গাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এদিকে, ইসরাইলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, লেবানন থেকে ইসরাইলের দিকে বেশকিছু ড্রোন শনাক্ত করা হয়েছে এবং এর মধ্যে একটি ভূপাতিত করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় নাহারিয়া শহরে হামলার ঘটনায় কয়েকজন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আকরি শহরে সাইরেন বেজে ওঠে। হিজবুলস্নাহর একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তাদের শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যার জবাব দেওয়া এখনো বাকি রয়েছে।
এর আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণ উপকণ্ঠে হামলা চালিয়ে হিজবুলস্নাহর এক শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যা করে ইসরাইল। দাহিয়েহ শহরে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীটির শক্তিশালী ঘাঁটিতে বিস্ফোরণে অন্তত একজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, তাদের গোয়েন্দা ভিত্তিক নির্মূল অভিযানে যুদ্ধবিমান থেকে ফুয়াদ শুকরকে টার্গেট করা হয়। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের দাবি, তিনি ইসরাইল অধিকৃত গোলান মালভূমিতে রকেট হামলার জন্য দায়ী।
গত শনিবার (২৭ জুলাই) ইসরাইলের দখলকৃত গোলান উপত্যকায় একটি রকেট হামলায় শিশুসহ ১২ জন নিহত হন। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরাইলি দখলকৃত এলাকায় এটিই সবচেয়ে প্রাণঘাতী আক্রমণ। গোলান মালভূমির মাজদাল শামস নামে একটি গ্রামে একটি ফুটবল মাঠে চালানো ওই রকেট হামলায় আরও অন্তত ২৯ জন আহত হন।
লেবাননে ইসরাইলি হামলায় সশস্ত্র গোষ্ঠীর চার সদস্য নিহত হওয়ার পর এ হামলা চালানো হয়। তবে হিজবুলস্নাহ ওই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। এদিকে হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলি সেনাদের পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরাইলের সংঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলি বিনিময় করছে। হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর ইসরাইল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বিরাজ করছে। বার্তা সংস্থা 'এএফপি'র সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে ৫৪২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুলস্নাহ যোদ্ধা।
\হএ ছাড়া নিহতদের মধ্যে ১১৪ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
অন্যদিকে, হিজবুলস্নাহর হামলায় ২২ ইসরাইলি সেনা ও ২৫ বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ৪৭ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া নিয়মিত গোলাবর্ষণের কারণে সীমান্তের উভয় পাশে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচু্যত হয়েছেন।