ইরান জানিয়েছে, তারা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির অবনতি চায় না, তবে ইসরাইলকে শাস্তি দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসির কানানি সোমবার বলেছেন, ইরান মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা চায়। তবে আগ্রাসনকারীকে শাস্তি দিলেই সেটা সম্ভব। কানানি বলেছেন, আমেরিকা যেন ইসরাইলকে সাহায্য করা বন্ধ রাখে এবং আগ্রাসনকারীকে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি সমর্থন করে। তথ্যসূত্র : ডিডাবিস্নউ নিউজ, এপি, এএফপি, রয়টার্স
তেহরান জানিয়েছে, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করার দায় ইসরাইলের। ইসরাইল অবশ্য এই দায় স্বীকার করেনি। হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে আমেরিকা, ইসরাইলসহ কয়েকটি দেশ। তবে ইসরাইলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লেবাননে তাদের ড্রোন হামলার ফলে বৈরুতের কাছে হিজবুলস্নাহ কমান্ডারের মৃতু্য হয়েছে।
এর আগে গত এপ্রিলে সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাস প্রাঙ্গণে ইসরাইলের হামলার পর তেহরান ইসরাইলের ওপর হামলা করে। কিন্তু তাদের প্রায় সব আক্রমণই ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম) প্রতিহত করে। আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জর্ডন সে সময় ইসরাইলকে সমর্থন করেছিল। ইরানের রেভলিউশনারি গার্ডের শীর্ষ কমান্ডার হোসেইন সালামি জানিয়েছেন, ইসরাইলকে উপযুক্ত সময় শাস্তি দেওয়া হবে।
সাবেক রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরানে
এদিকে, রাশিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই শোইগু তেহরান পৌঁছেছেন। তিনি এখন রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সচিব। তিনি ইরানের নেতা ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে আলোচনা করছেন। রাশিয়ার সরকারি মিডিয়া জানিয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে আর্থিক সম্পর্ক জোরদার করা নিয়েও কথা হয়েছে।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর থেকে রাশিয়া ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে চাইছে। গত সপ্তাহে রাশিয়া হানিয়ার হত্যার নিন্দা করেছে এবং বলেছে, এর তীব্র প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা
অন্যদিকে, আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নংকেন জি-৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বলেছেন, তারা যেন ইরান, হিজবুলস্নাহ এবং ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন, যাতে সব পক্ষ সংযত থাকে। ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সংযত থাকতে ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করার অনুরোধ করছেন। ইতালির হাতেই এখন জি-৭-এর প্রেসিডেন্সি রয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্ক বলেছেন, সব দেশ যেন উত্তেজনা কমানোর জন্য সচেষ্ট হয়। তারা ওই তিন পক্ষের ওপর প্রভাব খাটাবার চেষ্টা করে।
জর্ডনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত রোববার তেহরান গিয়েছিলেন। তিনি বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুলস্নাহর একটি বার্তা ইরানের প্রেসিডেন্টের কাছে দেন। যদি ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে গুরুতর সংঘাত দেখা দেয়, তাহলে জর্ডনের আকাশসীমা লঙ্ঘিত হতে পারে, এমন আশঙ্কা থাকছে।
হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরাইলে ইরানের পাল্টা হামলা ঠেকানোর শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি। হানিয়া হত্যার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতেই তেহরানে যান সাফাদি।