ইসরাইলি আগ্রাসন
গাজায় আরও দুই স্কুলে বিমান হামলা, নিহত অন্তত ৩০
হামলার শিকার স্কুল দুটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল
প্রকাশ | ০৬ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে ইসরাইলি বর্বর হামলায় কমপক্ষে আরও ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। উপত্যকাটির দুটি স্কুলে চালানো এই হামলায় নিহতদের ৮০ শতাংশই শিশু। হামলায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কিছু মানুষ। হামলার শিকার স্কুল দুটিতে ফিলিস্তিনি শরণার্থী পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছিল। তথ্যসূত্র : আনাদোলু নিউজ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা শহরের বাস্তুচু্যত লোকদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত দুটি স্কুলে ইসরাইলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৩০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে 'সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি' জানিয়েছে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, গাজা শহরের পশ্চিমে হাসান সালামা এবং আল-নাসর স্কুলকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, 'নিহতদের প্রায় ৮০ শতাংশই শিশু।' এই মুখপাত্র বোমা হামলার পর দুটি স্কুলের দৃশ্যকে 'দুঃখজনক' বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, 'গাজা শহরে আর নিরাপদ স্থান নেই এবং ইসরাইলি বাহিনী পবিত্র এসব স্থানকে সম্মান করে না।'
এর আগে শনিবার গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকায় বাস্তুচু্যত লোকদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান হামলা চালালে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের মতে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ১৫২টি স্কুলসহ বাস্তুচু্যত মানুষদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত অন্তত ১৭২টি কেন্দ্রে ইসরাইলি হামলা হয়েছে। বিবৃতিতে তারা বলেছে, 'স্কুলে হামলায় এক হাজার ৪০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছেন এবং এই গণহত্যাগুলো টানা ১০ মাস ধরে আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের চলমান অপরাধের অংশ হয়েই রয়েছে।'
মিডিয়া অফিস ইসরাইলি দখলদারিত্ব এবং মার্কিন প্রশাসনকে 'বাস্তুচু্যত ও বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত গণহত্যার জন্য দায়ী করেছে'। একইসঙ্গে গাজা উপত্যকায় চলমান রক্তপাত বন্ধ করার জন্য তেল আবিব এবং ওয়াশিংটনের ওপর চাপ সৃষ্টি করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
উলেস্নখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। হামলার পর বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরাইলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচু্যত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সবাই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরাইল এরই মধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।