দক্ষিণ লেবাননে ইসরাইলি বোমাবর্ষণ
ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহ। হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরাইল। হিজবুলস্নাহর দাবি, এই হামলায় ইসরাইলি সেনারা নিহত ও আহত হয়েছে। এর আগে ইসরাইলি ভূখন্ডে কয়েক ডজন 'কাতিউশা' রকেট ছুড়ে বলে শনিবার জানিয়েছে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহ। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
হিজবুলস্নাহ বলেছে, তারা ড্রোন দিয়ে আয়েলেট হাশাহারে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ৯১তম ডিভিশনের ব্যারাকে আক্রমণ করেছে। সরাসরি চালানো এই হামলায় ইসরাইলি সেনা নিহত ও আহত হয়েছে বলেও দাবি করেছে ইরানপন্থি লেবানিজ এই সশস্ত্র গ্রম্নপটি।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে তারা এটিকে রকেট হামলা বলে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে, হামলায় দুই সেনা 'মাঝারিভাবে আহত' হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তাদের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা লেবানন থেকে উৎক্ষেপণ করা রকেটগুলোকে আটকে দিলেও অগ্নিনির্বাপক কর্মীরা ওই এলাকায় ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভানোর জন্য কাজ করছে।
এদিকে, তেহরানে ইসমাইল হানিয়া এবং বৈরুতে হিজবুলস্নাহর শীর্ষ কমান্ডার ফুয়াদ শোকরের হত্যাকান্ডের পর উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কার মধ্যে ইতালি ও তুরস্ক তাদের নাগরিকদের লেবানন ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তোনিও তাজানি লেবাননে অবস্থানরত ইতালীয়দের 'যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাণিজ্যিক ফ্লাইটে ইতালিতে ফিরে আসার' এবং 'বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে' দেশের দক্ষিণে ভ্রমণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লেবাননে তার নাগরিকদের 'সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং একেবারে প্রয়োজন না হলে নাবাতিহ, দক্ষিণ লেবানন, বেকা এবং বালবেক-হারমেল অঞ্চলে ভ্রমণ না করতে' পরামর্শ দিয়েছে। বিবৃতিতে নাগরিকদের 'অপরিহার্য কোনো কারণ না থাকলে' তাদের লেবানন ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরাইলের সংঘাত শুরুর পর থেকে হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলিবিনিময় করছে। হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের মধ্যে ২০০৬ সালের যুদ্ধের পর এটিই ইসরাইল-লেবানিজ সীমান্তে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার ঘটনা।
বার্তা সংস্থা 'এএফপি'র সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের এই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত লেবাননে কমপক্ষে ৫৪২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশিরভাগই হিজবুলস্নাহ যোদ্ধা। এ ছাড়া নিহতদের মধ্যে ১১৪ জন বেসামরিক নাগরিকও রয়েছেন।
অন্যদিকে, হিজবুলস্নাহর হামলায় ২২ ইসরাইলি সেনা ও ২৫ বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ৪৭ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া নিয়মিত গোলাবর্ষণের কারণে সীমান্তের উভয়পাশে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচু্যত হয়েছেন।
