বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১
হতে পারে ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া

দুই হত্যাকান্ড মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা অনেকটাই বাড়াবে

বহু বছর ধরে হিজবুলস্নাহ ও হামাসকে সমর্থন করছে ইরান
যাযাদি ডেস্ক
  ০২ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
দুই হত্যাকান্ড মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা অনেকটাই বাড়াবে

লেবাননের হিজবুলস্নাহ ও গাজার হামাস নেতার মৃতু্যর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও প্রবল হয়েছে। গত মঙ্গলবার ইসরাইল জানিয়েছে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে তারাই হিজবুলস্নাহ কমান্ডার ফুয়াদ শোকরকে হত্যা করেছে। কারণ, শোকর ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত গোলান মালভূমিতে আক্রমণের পেছনে ছিলেন। সেই আক্রমণে ১২ জন শিশু মারা গিয়েছিল।

আর গত বুধবার হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া ইরানে নিহত হয়েছেন। গত বছর ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলে হামলা চালায়। হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে চিহ্নিত করেছে আমেরিকা, জার্মানি-সহ কয়েকটি দেশ। ওই ঘটনার পর ইসরাইল হানিয়াকে তাদের একজন 'টার্গেট' বলে জানায়। যদিও এখন পর্যন্ত হানিয়ার মৃতু্য নিয়ে ইসরাইল কোনো কথা বলেনি, তবে অভিযোগের আঙুল তাদের দিকেই রয়েছে। হামাসের সশস্ত্র শাখা এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, হানিয়ার হত্যার তীব্র প্রতিক্রিয়া হবে।

ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া হতে পারে

'ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অফ ফরেন রিলেশনস'র মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক গবেষক কেলি পেটিলো বলেছেন, 'এই দুই হত্যাকান্ডের প্রভাব গোটা অঞ্চলের ওপর পড়বে।' তিনি বলেন, 'ঠিক কী প্রভাব পড়বে, তা এখনই বলা কঠিন, তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকা উচিত।'

তিনি বলেছেন, 'হানিয়ার মৃতু্যর পর ইসরাইল হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে শেষ করে দিল। এই রাজনৈতিক নেতারা ছিলেন মধ্যপন্থি। কাতার, মিসর ও আমেরিকা যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা করছে, এতে হানিয়ার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।' কেলির মতে, 'এখন সামরিক শাখার নেতারা আরও বেশি করে ফিলিস্তিনিদের সমর্থন পাবেন। তারাও বলতে পারবেন, হানিয়া আলোচনার রাস্তায় গিয়েছিলেন। তার কী হাল হলো, তা দেখা যাচ্ছে।'

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় ধাক্কা

চীনও একটা চেষ্টা চালিয়েছিল। তারা ১৪টি ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর মধ্যে আলোচনার ব্যবস্থা করেছিল। যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা কে শাসন করবে, তা নিয়ে একটা মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিল। হানিয়ার মৃতু্য এতেও প্রভাব ফেলতে পারে। এ ছাড়া হামাস যাদের বন্দি করে রেখেছে, তাদের মুক্তির ওপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।

জেরুজালেমের হিব্রম্ন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সাইমন উলফগ্যাং বলেন, 'হানিয়ার মৃতু্যর প্রভাব কী হবে, তা এখনই আন্দাজ করাটা কঠিন। তবে বন্দিমুক্তি নিয়ে আলোচনা একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিল। এই হত্যাকান্ড তার ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে হচ্ছে।'

হিজবুলস্নাহ ও ইরানের ওপরও প্রবল চাপ

কেলি পেটিলো বলেছেন, 'শোকর ছিলেন হিজবুলস্নাহর দুই নম্বর নেতা। ফলে তার হত্যার পর হিজবুলস্নাহ প্রত্যাঘাত করতে চাইবে।' তার মতে, 'হিজবুলস্নাহ ও ইসরাইলের মধ্যে শুধু সংঘাত বাড়বে তাই-ই নয়, হিজবুলস্নাহ নব উদ্যমে এই সংঘাতের মধ্যে নিজেদের জড়াতে পারে।'

সাইমন উলফগ্যাং বলেছেন, 'বহু বছর ধরে হিজবুলস্নাহ ও হামাসকে সমর্থন করছে ইরান। তেহরানে ইসরামাইল হানিয়ার মৃতু্য ইরানকে ধাক্কা দেওয়ার মতো ঘটনা। সবচেয়ে বড় কথা, নতুন প্রেসিডেন্টের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সময় এটা ঘটেছে। এটাও দেখানো হলো, ইরান তার অতিথিকেই নিরাপত্তা দিতে পারে না।'

পেটিলো বলেন, 'ইরানের মাটিতে এই হত্যাকান্ড হয়েছে। তাই ইরান এখন প্রত্যাঘাত করতে চাইবে। তাদের দিকে এখন নজর থাকবে। তথ্যসূত্র : ডিডাবিস্নউ নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে