ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে শনিবার অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে বেরিয়ে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক থেকে 'ওয়াক আউট' করে মমতা বলেন, 'আমাকে পাঁচ মিনিটও বলতে দেওয়া হয়নি। মাইক বন্ধ করে আমাকে অপমান করা হয়েছে। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
বিরোধী জোট 'ইনডিয়া'র সাত মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় বাজেটে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বৈঠক বয়কট করলেও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার সকালে বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবনের বাইরে গিয়ে তিনি বলেন, অন্যদের ২০ মিনিটের বেশি বলার সুযোগ দেওয়া হলেও আমাকে পাঁচ মিনিটও বলতে দেওয়া হয়নি। এর আগেই মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই বঞ্চনার প্রতিবাদে আমি বৈঠক ছেড়ে চলে এসেছি।'
এ ঘটনাকে সরাসরি 'অপমান' বলেও মন্তব্য করেছেন মমতা। তিনি বলেন, বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র আমিই বৈঠকে হাজির হয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে কথা বলতে দেওয়া হলো না। আমি আরও কিছু বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এর আগেই মাইক বন্ধ করে অপমান করা হলো।
প্রসঙ্গত, বিরোধী জোট 'ইনডিয়া'র আট মুখ্যমন্ত্রী শনিবারের বৈঠকে অনুপস্থিত থাকলেও মমতা শনিবারের বৈঠক যোগ দিয়েছিলেন। মমতা জানিয়েছেন, এরপর এ ধরনের আর কোনো বৈঠকে তিনি থাকবেন না।
অতীতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একাধিক বার লোকসভায় তার মাইক বন্ধের অভিযোগ তুলেছেন। এবার অঙ্গরাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকেও নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মাইক বন্ধ করে বিরোধীদের 'কণ্ঠরোধ'-এর অভিযোগ উঠল।
এর আগে মোদির সঙ্গে বৈঠকে মমতা যোগ দেবেন কিনা, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা কেসি বেণুগোপাল মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে বৈঠকে যোগ না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এরপরও মমতা যোগ দিচ্ছেন, সেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিরোধী জোট 'ইনডিয়া'-র সমন্বয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। মমতাকে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন বাংলার সিপিএম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। একটি অংশ মনে করতে শুরু করেন, মোদির সঙ্গে বৈঠকে যোগ দিলে বিরোধী জোটে 'একা' হয়ে পড়তে পারেন মমতা।
কেজরিওয়ালের পরিবারের
পাশে মমতা
এই বৈঠকের আগের দিন ভারতের করাবন্দি দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দুঃসময়ে তার পরিবারের পাশে দাঁড়ান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিলিস্নতে কেজরিওয়ালের বাড়িতে গিয়ে শুক্রবার তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন মমতা।
গত ২১ মার্চ গ্রেপ্তার হন কেজরিওয়াল। দিলিস্নর আবগারি নীতিকান্ডে তাকে গ্রেপ্তার করে ভারতের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তোলা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্ট ওই মামলায় কেজরিওয়ালকে অন্তর্র্বর্তী জামিন দেয়। কিন্তু সিবিআইয়ের করা মামলায় তিহার জেলেই রয়েছেন তিনি।
দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যাতে দেখা যায়- অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়িতে গিয়ে কেজরিওয়ালের বাবা এবং মায়ের পা ছুঁয়ে প্রণাম করছেন মমতা। কারাবন্দি কেজরিওয়ালের শরীর নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।