ন্যাটো সম্মেলন বাইডেনের অগ্নিপরীক্ষা
ওয়াশিংটন ডিসিতে মঙ্গলবারেই শুরু হয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্মেলন। নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এ সম্মেলন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য এক 'অগ্নিপরীক্ষা' হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা
প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটি ভুলেই ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে রাজনৈতিক চাপা উত্তেজনা শুরু হতে পারে। আর তাতে নভেম্বরের নির্বাচনে বাইডেনের প্রার্থিতার আশাও নিভে যেতে পারে।
ওয়াশিংটন ডিসিতে মঙ্গলবারেই শুরু হয়েছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্মেলন। নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এ সম্মেলন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য এক 'অগ্নিপরীক্ষা' হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকরা। কারণ বাইডেনকে তার প্রেসিডেন্ট পদে থাকার যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ করে দিতে পারে এ সম্মেলন।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সমালোচিত নির্বাচনি বিতর্কের ১২ দিন পর বাইডেন এখন তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নজরদারির মধ্যে তীব্র লড়াই করছেন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি ওই বিতর্কে বাইডেনের শোচনীয় পরাজয়ের পর থেকেই লাভ-ক্ষতির হিসাব-নিকাশ শুরু করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। চলতি সপ্তাহে ন্যাটোর ৭৫তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন বাইডেনের জন্য সেইসব হিসাব-নিকাশ চুকানোর সময়। সম্মেলনের ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। এ সম্মেলন বাইডেনের প্রার্থিতা বাঁচাতেও পারে, আবার ডোবাতেও পারে।
গত কয়েকদিনে বাইডেন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। নির্বাচনী বিতর্কে হারার পর থেকেই বাইডেন ডেমোক্র্যাটদের উদ্বেগ নানাভাবে চেষ্টা করেও কমাতে পারছেন না।
নির্বাচনি দৌড় থেকে বাইডেনের সরে যাওয়ার আহ্বান ক্রমেই জোরাল হচ্ছে। বাইডেনের মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে।
এ পরিস্থিতিতে বাইডেনকে ন্যাটো সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার সক্ষমতা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে একক সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ন্যাটো জোটের নেতাদের তিনদিনের বৈঠক ও জনসমাগম আয়োজন করতে চলেছেন বাইডেন।
ন্যাটো সম্মেলন এমন একটি মঞ্চ যেখানে বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে পারদর্শী বাইডেনের স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করা উচিত। তবে বাইডেন এরই মধ্যে তার প্রেসিডেন্সি নিয়ে যে ঝুঁকির মুখে আছেন, তাতে ন্যাটোর মঞ্চেও তার জন্য অনেক বেশি ঝুঁকিতে থাকতে হচ্ছে।
সম্মেলনে বাইডেনের অবস্থান দুর্বল হলে তাতে তাকে আন্তর্জাতিক পরিসরে এমনকি দেশের ভেতরেও পরিণতি ভোগ করতে হবে।
তার একটি ভুলেই ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হতে পারে। আর তাতে নভেম্বরের সাধারণ নির্বাচনে বাইডেনের জয় পাওয়া তো দূরের কথা, নির্বাচনে তার প্রার্থিতা ধরে রাখার আশাও নিভে যেতে পারে। আর বাইডেনের এমন অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররাও ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবার ফিরে আসা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়তে পারে। ট্রাম্প তার সঙ্গে করে বৈদেশিক নীতির যে নাটকীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবেন সে কথা চিন্তা করেই মার্কিন মিত্রদের শঙ্কা বাড়বে।
জার্মান মার্শাল ফান্ড জিওস্ট্র্যাটেজি নর্থের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বার্জিনা বলেন, 'বাইডেন যে সমালোচনার মধ্যে পড়েছেন, আমরা জানি না তিনি কীভাবে এ থেকে বেরিয়ে আসবেন।'
তিনি বলেন, 'বোঝাই যাচ্ছে, ট্রাম্প ও তার পররাষ্ট্রনীতি কৌশল নিয়ে ইউরোপের অনেক নেতাই উদ্বিগ্ন। বিতর্কে হারার পর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররা বাইডেনের দায়িত্ব পালন নিয়ে সন্দিহান।
'গত দুই সপ্তাহ ধরে নেতারা নতুন যে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন, তা হলো- বাইডেন উদ্বেগ। সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ একজন মিত্র, সবচেয়ে অর্থবহ একজন মিত্রকে দুর্বল হয়ে পড়তে দেখা উদ্বেগের।
'সুতরাং, আমি মনে করি বাইডেন পরীক্ষায় উতরে যান এমনটাই সবাই আশা করে আছে। কিন্তু তিনি যদি আশানুরূপ ফল না করতে পারেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে আরও অনেক প্রশ্ন উঠবে,' বলেন বার্জিনা।