রোববার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

বাইডেনের পাশে ডেমোক্রেট নেতারা

যদিও ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর শুরু হওয়া নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া থামেনি বাইডেন নির্বাচন থেকে সরবেন না :ভবিষ্যদ্বাণী ট্রাম্পের
যাযাদি ডেস্ক
  ১০ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

আমেরিকার পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে ডেমোক্রেট নেতারা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। যদিও পার্টির অনেক আইনপ্রণেতা একান্তে ও প্রকাশ্যে তার পুনর্র্নির্বাচনের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। গত মাসে আটলান্টায় বিতর্কে তার বিপর্যস্ত পারফরম্যান্সের পর এই অসন্তোষ বেড়েছে। তথ্যসূত্র : দ্য হিল, রয়টার্স

প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফরিস ও সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চার্লস শুমার সোমবার বাইডেনের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা পুনরায় নিশ্চিত করেছেন। যদিও বিতর্কের পর শুরু হওয়া নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া এখনো থামেনি। জেফরিস বলেন, 'বিতর্কের পরের দিনই আমি প্রকাশ্যে বলেছিলাম যে, আমি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ডেমোক্রেটিক প্রার্থীকে সমর্থন করি। আমার অবস্থান অপরিবর্তিত।'

তবে, ডেমোক্রেটদের মধ্যে বাইডেনের পুনর্র্নির্বাচন নিয়ে বিরোধিতা ক্রমেই বাড়ছে। আর্মড সার্ভিস কমিটির র?্যাংকিং সদস্য প্রতিনিধি অ্যাডাম স্মিথ সোমবার ষষ্ঠ হাউজ ডেমোক্রেট হিসেবে প্রকাশ্যে বাইডেনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাইডেনের অতীতে ভালো রেকর্ড থাকলেও তিনি এখন আর ভোটারদের উজ্জীবিত করতে পারছেন না। স্মিথ সিএনএন-এর 'দ্য লিড' অনুষ্ঠানে বলেছেন, 'আমি মনে করি, তার সরে দাঁড়ানো উচিত। এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তিনি ডেমোক্রেটিক বার্তা বহনের জন্য সেরা ব্যক্তি নন।'

এদিকে, সোমবার বাইডেন আরও কয়েকজন বিশিষ্ট আইনপ্রণেতার সমর্থন পেয়েছেন। যারা ৪ জুলাইয়ের দীর্ঘ ছুটির পর ওয়াশিংটনে ফিরে এসে তার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ (ডি-ওয়াই) বলেন, বাইডেন স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি এই লড়াইয়ে আছেন এবং তিনি সরে যাচ্ছেন না। আমি নিশ্চিত করছি, আমি তাকে সমর্থন করছি এবং আমরা নভেম্বর মাসে জিততে পারি, তা নিশ্চিত করতে চাই।'

ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে বাইডেন মাঝে মাঝে অসংলগ্ন ছিলেন। কথা বলতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছিলেন এবং বিষয়বস্তু পরিবর্তন করেছিলেন। এই 'পারফরম্যান্স' ডেমোক্রেটদের বিস্মিত করেছে। তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রতিনিধি স্কট পিটার্স সোমবার বলেছেন, তিনি বাইডেনকে সরে যেতে বলার জন্য প্রস্তুত নন। তবে চলতি সপ্তাহে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন যে, প্রচারাভিযানের কোনো কৌশল আছে কিনা।

বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ কমাতে এবং ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউস থেকে দূরে রাখতে, দলের ঐক্য বজায় রাখতে ব্যস্ত জেফরিস ও অন্যান্য ডেমোক্রেট নেতাদের জন্য পরিস্থিতি একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধি এমি বেরা বলেছেন, 'বাইডেন যদি লড়াইয়ে থাকেন তাহলে তিনি আমাদের প্রার্থী। আর আমরা যদি বিভক্ত থাকি তাহলে আমরা এই নির্বাচন জিততে পারব না।'

সমর্থন নিশ্চিত রাখতে সোমবার কংগ্রেশনাল বস্ন্যাক ককাসের (সিবিসি) সদস্যদের সঙ্গে একটি ফোনালাপ করেছেন বাইডেন। যা তাকে পুনর্র্নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন জোরদার করার সুযোগ দিতে পারে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বাইডেন নির্বাচন থেকে সরবেন

না : ভবিষ্যদ্বাণী ট্রাম্পের

এদিকে, দলের ভেতরে-বাইরে যত সমালোচনা চলুক না কেন, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেনের পূর্বসূরি প্রেসিডেন্ট এবং আগামী নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।

সোমবার আমেরিকার নিউজ চ্যানেল 'ফক্স নিউজ'কে টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, 'দুটি ব্যাপার এখানে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত দেশের প্রেসিডেন্ট এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতা হওয়ায় ডেমোক্রেটিক পার্টিতে তার অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তাছাড়া দলের মধ্যে তার ভক্ত-অনুসারী ও প্রতিনিধিদেরও অভাব নেই। তাই তিনি নিজে থেকে না চাইলে, নির্বাচনী দৌড় থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া অসম্ভব। এমনকি সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারাও এক্ষেত্রে কোনো সহযোগিতা করবে না। তাছাড়া আমি তাকে জানি। তার ইগো সমস্যা রয়েছে। তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, কারণ আমি প্রার্থী হয়েছি। যতক্ষণ আমি প্রার্থী থাকব, ততক্ষণ তিনি নির্বাচন থেকে সরবেন না। তিনি মূলত আমাকে পরাজিত করতে চাইছেন।'

মার্কিন সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা অনুসারে, প্রেসিডেন্ট যদি কোনো কারণে কারও সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দেওয়া শুরু করেন, সেক্ষেত্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরা একজোট হয়ে প্রেসিডেন্টকে তার পদ ও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো সক্ষমতা রাখেন।

২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করে যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হন জো বাইডেন, সে সময় তার বয়স ছিল ৭৮, ট্রাম্পের ৭৫ বছর। বর্তমানে বাইডেনের বয়স ৮১ বছর এবং দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে প্রেসিডেন্ট হওয়ার রেকর্ডটি তার।

চলতি বছরের ৫ নভেম্বরে ফের নির্বাচন হবে। বয়সজনিত কারণে বাইডেনের রাজনৈতিক দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক নেতা তাকে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু বাইডেন সেসব আহ্বানে কর্ণপাত করেননি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে