আজকের যায়যায়দিন

ইউক্রেনের একটি বিদু্যৎ কেন্দ্রে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা সুমিতে চালানো ওই হামলায় এক লাখের বেশি মানুষ বিদু্যৎবিহীন হয়ে পড়েছেন। হামলার শিকার ওই অঞ্চলটি রুশ সীমান্তের পাশেই অবস্থিত। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

রুশ বিমান হামলার পর রাশিয়ার সীমান্তবর্তী সুমি শহর এবং ওই অঞ্চলের গ্রাহকদের বিদু্যৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। বিদু্যৎ অবকাঠামোতে ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া এই হামলায় কোনো হতাহতের বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ইউক্রেনজুড়ে বিদু্যৎ অবকাঠামোগুলোতে একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এসব হামলার কারণে প্রায়ই দেশটির মানুষ ব্যাপক 'বস্ন্যাকআউটে' নিমজ্জিত হয়ে থাকেন। এর ফলে লোকজন পানি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ বা জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা সরঞ্জাম ছাড়াই গ্রীষ্মের তীব্র পরিস্থিতি সহ্য করতে বাধ্য হন।

শুধুমাত্র গত তিন মাসে রাশিয়ার হামলায় ৯ গিগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির জাতীয় বিদু্যৎ সংস্থা 'ইউক্রেনারগো' বলেছে, শত্রম্নদের এই কর্মকান্ডে ইউক্রেন তার সব তাপবিদু্যৎ কেন্দ্র হারিয়েছে এবং ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সব পানিবিদু্যৎ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অবশ্য রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে সহায়তা করার জন্য ইউক্রেনে উদ্বৃত্ত বিদু্যৎ সরবরাহ করছে পোল্যান্ড। কিন্তু ইউক্রেনেগো সারাদেশে সারা দিনই বিদু্যতের লোডশেডিংয়ের সময় নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়েছে। কারণ দেশীয় উৎপাদন এবং বিদু্যৎ আমদানিও সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারেনি।

ইউক্রেনারগোর প্রধান মারিয়া সাতুরিয়ান বলেন, এত ঘন ঘন, এত দীর্ঘ এবং এত বেশি গ্রাহকের বিদু্যৎ সঞ্চালন বন্ধ করার জন্য তার সংস্থার প্রতি প্রচুর ক্ষোভ রয়েছে এবং তিনি সেটি জানেন। কিন্তু তিনি বলেন, এটি করা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, 'আমরা যুদ্ধের মধ্যে রয়েছি। রাশিয়ান সন্ত্রাসীদের কাছে ইউক্রেনের বিদু্যৎ খাত অন্যতম লক্ষ্য। এবং এটা স্পষ্ট কেন, কারণ আমাদের জীবন, আমাদের সভ্যতা, বিদু্যতের ওপর নির্ভরশীল। এই মূল্য আমরা স্বাধীনতার জন্যই দিতে পারি।'

এদিকে, ইউক্রেনীয় আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গত ৫-৬ জুলাই রাতে রাশিয়ার উৎক্ষেপণ করা ২৭টি শাহেদ কামিকাজে ড্রোনের মধ্যে ২৪টি ভূপাতিত করেছে বলে 'এয়ার ফোর্স কমান্ড' মেসেজিং অ্যাপ 'টেলিগ্রামে' জানিয়েছে। ইলেকট্রনিক জ্যামিং এবং অ্যান্টি-এয়ার ডিফেন্স ব্যবহার করে সুমি অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব ড্রোনগুলোকে আটকানো হয়েছিল বলেও জানিয়েছে তারা।

ইউক্রেনের দুটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র

ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলে দুটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি করেছে রাশিয়া। রোববার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। 'টেলিগ্রাম' মেসেজিং অ্যাপে প্রকাশ করা একটি বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়টি বলেছে, ইউঝনে বন্দর এলাকায় এই হামলা হয়েছে। এতে একটি রেডার স্টেশনও ধ্বংস হয়েছে।

প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থায় কখন হামলা হয়েছিল তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। রাশিয়ার এমন দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। এ বিষয়ে ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। এর আগে, রোববার ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছিল, রাশিয়া দুটি ইস্কান্দার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছে।