নিহত ১৬ ফিলিস্তিনি
গাজার স্কুলে ফের বিমান হামলা
মধ্য গাজার নুসেইরাত আশ্রয় কেন্দ্রে ওই স্কুল ভবন ছিল হাজারও বাস্তুচু্যত মানুষের আশ্রয়স্থল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরাইলের জবাবের অপেক্ষায় হামাস
প্রকাশ | ০৮ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলে আবারও বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। রোববারের হামলায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। জাতিসংঘ পরিচালিত এই স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং সেখানে সাত হাজারের মতো মানুষ ওই ভবনে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি, রয়টার্স
হামাস নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মধ্য গাজার নুসেইরাত আশ্রয় কেন্দ্রে ওই স্কুল ভবন ছিল হাজারও বাস্তুচু্যত মানুষের আশ্রয়স্থল। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা আল-জাওনি স্কুল এলাকার বিভিন্ন স্থাপনায় আঘাত হেনেছে, যেসব অবকাঠামোতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছিল।
এদিকে, ওই ক্যাম্পের আরেক বাড়িতে পৃথক বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। নুসেইরাত স্কুলে হামলার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপ ও ধুলার মধ্যে বয়স্ক ও শিশুরা চিৎকার করছেন। তারা আহতদের পাশে দাঁড়াতে ছোটাছুটি করছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ব্যস্ত একটি বাজার সংলগ্ন ওই স্কুল ভবনের ওপরের তালাগুলোকে নিশানা করে এই হামলা চালায় ইসরাইল। এক নারী সাংবাদিক বলেন, এমন কিছু শিশুর প্রাণ গেছে, যারা হামলার সময় ভবনটিতে কোরআন পড়ছিল। কোনো ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই তারা হামলা করেছে। এ নিয়ে চতুর্থবার তারা স্কুলটিতে হামলা চালাল।
তবে এক 'এক্স' পোস্টে দেওয়া বিবৃতিতে আইডিএফ স্কুল ভবনে হামলার কথা স্বীকার করেছে। তারা বলছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে তারা 'অনেক' পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে 'আকাশ থেকে সুনির্দিষ্ট নজরদারি' এবং 'বাড়তি গোয়েন্দা তৎপরতা' রয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী বলছে, হামাস যোদ্ধারা ওই স্থানটিতে 'লুকিয়ে' থেকে আইডিএফ সেনাদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছিল। আইডিএফ আরও জানায়, ইসরাইল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার জন্য হামাস বেসামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করছে, বেসামরিক জনগণকে মানব ঢাল বানাচ্ছে; এভাবে তারা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে চলেছে!
অন্যদিকে, হামাস এই হামলাকে 'বাস্তুচু্যত অসহায় বেসামরিক মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ' বলে বর্ণনা করেছে। 'টেলিগ্রাম' চ্যানেলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি বলেছে, হতাহতদের মধ্যে অনেক নারী, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি আছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজাজুড়ে ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডটি খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা সরবরাহের মারাত্মক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, মসজিদ কিংবা গির্জার মতো বেসামরিক স্থাপনাও।