হামাসের দাবি
লড়াইয়ে ১০ ইসরাইলি সেনা নিহতহামাসের দাবি
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পণবন্দিদের মুক্তির লক্ষ্যে বোঝাপড়া হচ্ছে
প্রকাশ | ০৬ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস জানিয়েছে, গাজা সিটির সুজাইয়ায় বৃহস্পতিবার তাদের চালানো অভিযানে ১০ ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। এসব সেনা একটি ভবনের ভেতর ছিল। তখন তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায় হামাসের যোদ্ধারা। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি
'টেলিগ্রামে' দেওয়া এক বিবৃতিতে আল-কাসাম ব্রিগেডস বলেছে, 'ইসরাইলি সেনাদের দখলে থাকা ভবনে যোদ্ধারা একটি টিবিজি রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে। এরপর যোদ্ধারা ভবনে প্রবেশ করে এবং দূর থেকে বাকি সেনাদের হত্যা করে।' ১০ ইসরাইলি সেনাকে হত্যার ব্যাপারে আল-কাসাম ব্রিগেডস আরও বলেছে, 'যোদ্ধারা বের হয়ে যাওয়ার সময় ভবনে একটি বিস্ফোরকে বিস্ফোরণ ঘটায়। আহত ও নিহত সেনাদের উদ্ধার করতে পরে ইসরাইলিদের হেলিকপ্টার নিয়ে আসতে হয়।' এ ছাড়া ইয়াসিন-১০৫ রকেট দিয়ে দখলদার ইসরাইলিদের একটি মারকাভা-৪ ট্যাংকে হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে হামাস।
গাজা সিটিতে কয়েকদিন ধরে আবারও হামলা চালানো শুরু করেছে ইসরাইলি সেনারা। এই অঞ্চল থেকে হামাসের যোদ্ধাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে একাধিকবার দাবি করেছে ইসরাইল। তা সত্ত্বেও তাদের আবারও এখানে ফিরে আসতে হয়েছে। এরপর থেকেই সেখানে তুমুল লড়াই চলছে।
প্রায় ৯ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। অপরদিকে ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ছয় শতাধিক ইসরাইলি সেনা প্রাণ হারিয়েছে। এ ছাড়া হামাসের হামলায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে অনেক সেনা।
হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের
বোঝাপড়ার ইঙ্গিত
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পণবন্দিদের মুক্তির লক্ষ্যে বোঝাপড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। মোসাদের প্রধান শুক্রবার দোহায় আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। ওই মার্কিন কর্মকর্তার মতে, সেই পরিকল্পনা কার্যকর করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে এখনো সমঝোতা হয়নি। ফলে আগামী কয়েক দিনে চূড়ান্ত সাফল্যের আশা নেই।
বৃহস্পতিবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু টেলিফোনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি পণবন্দিদের মুক্তির লক্ষ্যে হামাসের সঙ্গে আলোচনা আবার শুরু করার জন্য কাতারের রাজধানী দোহায় এক প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা বলেন। সেই কর্মকর্তার মতে, নেতানিয়াহু আবার আলোচনার ছাড়পত্র দেওয়ায় বাইডেন সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
উলেস্নখ্য, পরে জানা গেছে, ইসরাইলের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডাভিড বারনেয়া স্বয়ং দোহায় যাচ্ছেন। শুক্রবারই সেই আলোচনা হওয়ার কথা। তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মহম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের পাঠানো প্রস্তাব নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। গাজায় ইসরাইলি সামরিক অভিযান বন্ধ করে পণবন্দিদের মুক্তির লক্ষ্যে বোঝাপড়ার জন্য দেশ-বিদেশে প্রবল চাপের মুখে রয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। তবে তার জোট সরকারের উগ্র ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদী শরিকরা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে আপসের ঘোর বিরোধিতা করে আসছে।
বাইডেন প্রশাসন বর্তমান সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের লক্ষ্যে জোরাল উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে। গাজায় শান্তি ফেরাতে কাতার, মিসরসহ অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন মার্কিন প্রতিনিধিরা। গত মে মাসে বোঝাপড়ার এক কাঠামো প্রস্তুত হলেও ইসরাইল ও হামাস এতকাল সেই পথে এগোতে দ্বিধা করছিল। এবার হামাসের কিছু পাল্টা প্রস্তাবের ভিত্তিতে চূড়ান্ত বোঝাপড়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মার্কিন কর্মকর্তা মনে করছেন।