শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১
কমান্ডার হত্যার প্রতিশোধ

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অবস্থানে 'রকেটবৃষ্টি' হিজবুলস্নাহর

যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অবস্থানে 'রকেটবৃষ্টি' হিজবুলস্নাহর

লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন বা হিজবুলস্নাহর জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডারকে হত্যার প্রতিশোধে ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর অবস্থানে দুই শতাধিক রকেট ছুড়েছে ইরান সমর্থিত শিয়া এই সশস্ত্র গোষ্ঠী। ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে বৃহস্পতিবার এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে হিজবুলস্নাহ। তথ্যসূত্র : আরব নিউজ, এএফপি, রয়টার্স

হামলার সময় আত্মাঘাতী ড্রোনও ব্যবহার করা হয়েছে। গত বুধবার লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় টাইরে শহরের কাছের একটি এলাকায় ইসরাইলি হামলায় হিজবুলস্নাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার মোহাম্মদ নাসের নিহত হন। এর আগে গত জুন মাসে ইসরাইলি হামলায় হিজবুলস্নাহর আরেক শীর্ষ কমান্ডার তালেব আবদুলস্নাহ নিহত হন। বুধবারের হামলায় নিহত কমান্ডার নাসের হিজবুলস্নাহর কাছে তালেব আব্দুলস্নাহর মতো একই পদমর্যাদা ও গুরুত্বের অধিকারী ছিলেন। তালেব আবদুলস্নাহ হত্যাকান্ডের প্রতিশোধে ওই সময় ইসরাইলে গত ৯ মাসের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ড্রোন ও রকেট হামলা চালিয়েছিল হিজবুলস্নাহ।

হিজবুলস্নাহর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বুধবার দক্ষিণ লেবাননের টাইরে এলাকায় শত্রম্নপক্ষের চালানো হত্যাকান্ডের প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার হিজবুলস্নাহ যোদ্ধারা ইসরাইল অধিকৃত সীমান্তের ওপারে গোলান মালভূমিতে পাঁচটি ইসরাইলি ঘাঁটিতে বিভিন্ন ধরনের ২০০টির বেশি রকেট নিক্ষেপ করেছে। এ ছাড়াও ওই হত্যাকান্ডের প্রতিশোধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর আটটি অবস্থানে বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে হিজবুলস্নাহ।

বিবৃতিতে ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠী বলেছে, তাদের যোদ্ধারা গোলান মালভূমিসহ সীমান্ত এলাকায় ইসরাইলি ঘাঁটি লক্ষ্য করে বিস্ফোরক বোঝাই ড্রোনের বহর নিক্ষেপ করেছে।

এদিকে, বৃহস্পতিবার লেবানন সীমান্ত সংলগ্ন ইসরাইলি ভূখন্ডজুড়ে এবং গোলান মালভূমিতে রকেট ও বিমান হামলার সাইরেন বাজিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজার হামাসের সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রত্যেক দিন ইসরাইলি সামরিক চৌকি ও ভূখন্ডে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুলস্নাহ ও তাদের মিত্ররা। ইসরাইল-লেবানন সীমান্ত এলাকায় এবারের এই সংঘাত ২০০৬ সালের ইসরাইল-হিজবুলস্নাহ যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

ইসরাইল-লেবানন সীমান্তে ৯ মাস ধরে চলা সহিংসতায় ইসরাইলি হামলায় ৩০০ জনের বেশি হিজবুলস্নাহ যোদ্ধা ও ৮৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, হিজবুলস্নাহর হামলায় ১৮ ইসরাইলি সেনা ও ১০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলে ঢুকে এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাসের শত শত যোদ্ধা। একই সঙ্গে আরও ২৫০ জনের বেশি মানুষকে ধরে নিয়ে গাজায় বন্দি করে ফিলিস্তিনি এই স্বাধীনতাকামী সংগঠনের সদস্যরা। পরে ওই দিনই গাজায় পুরোমাত্রার যুদ্ধ শুরু করে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী।

গাজার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৯ মাসের যুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় গাজায় প্রায় ৩৮ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৮৫ হাজার মানুষ। ইসরাইলের অব্যাহত বোমা হামলায় উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে