টানা ৯ মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আকাশ ও স্থলপথে হামলা করে চলেছে ইসরাইল। নিরলস এই হামলায় গাজা এরই মধ্যে পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে, দেখা দিয়েছে মানবিক সংকট। সংকট এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, গাজায় প্রতি ১০ জনের ৯ জনই হয়েছেন বাস্তুচু্যত। জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়-বিষয়ক কার্যালয় (ওসিএইচএ) একথা জানিয়েছে। তথ্যসূত্র : এএফপি
ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ওসিএইচএ সংস্থার প্রধান আন্দ্রেয়া ডি ডোমেনিকো বলেছেন, গাজায় প্রায় ১৯ লাখ মানুষ বাস্তুচু্যত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি জেরুজালেম থেকে নিউইয়র্ক এবং জেনেভায় অবস্থানরত সাংবাদিকদের বলেন, 'দুর্ভাগ্যবশত, গাজা উপত্যকায় গত বছরের অক্টোবর থেকে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন অন্তত একবার, না হয় ১০ বার পর্যন্ত অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচু্যত হয়েছেন বলে আমরা অনুমান করছি।' তিনি আরও বলেন, 'আগে আমরা বাস্তুচু্যত মানুষের সংখ্যা ১৭ লাখ বলে অনুমান করছিলাম। কিন্তু রাফাহতে সামরিক বাহিনীর অভিযান এবং দক্ষিণ গাজার এই শহরটি থেকে অতিরিক্ত বাস্তুচু্যতির ঘটনায় সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে।' তিনি বলেন, এই সংখ্যার পেছনে রয়েছেন এমন সব মানুষ, যারা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এবং তাদের নানারকম অভিযোগ রয়েছে। তাদের স্বপ্ন ও আশাও রয়েছে।
আন্দ্রেয়া ডি ডোমেনিকো বলেন, 'তারপর আমরা উত্তর গাজায়ও আবার সেনা অভিযান হতে দেখেছি, যা আরও মানুষকে ওই অঞ্চল থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এই ধরনের সামরিক অভিযান মানুষকে বারবার তাদের জীবন পুনরায় নতুন করে শুরু করতে বাধ্য করেছে। তারা গত ৯ মাস ধরে (দাবা বা লুডুর মতো) বোর্ড গেমের ঘুটির মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে।' তিনি বলেন, ইসরাইলের সামরিক অভিযানের মাধ্যমে গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগ করা হয়েছে। ওসিএইচএ অনুমান করছে, অবরুদ্ধ এই অঞ্চলের উত্তরে বসবাসরত তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ লোক দক্ষিণাঞ্চলে যেতে পারেননি।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আনুমানিক এক লাখ ১০ হাজার লোক রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজা উপত্যকা ছেড়ে যেতে পেরেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও গত মে মাসের শুরুতে ইসরাইল গুরুত্বপূর্ণ এই ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং এরপর থেকে সেটি বন্ধ রয়েছে।