শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১
জাতিসংঘের মন্তব্য

ইমরান খানের গ্রেপ্তার বিধিবহির্ভূত আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন

নির্বাচনে জালিয়াতি ও কারচুপির মাধ্যমে কয়েক ডজন সংসদীয় আসন চুরি করা হয়েছিল
যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
ইমরান খান

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ। এছাড়া ইমরানকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে কারারুদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার 'ওয়ার্কিং গ্রম্নপ অন আরবিট্রারি ডিটেনশন'। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা

সোমবার প্রকাশ্যে আসা এক মতামতে জেনেভা-ভিত্তিক জাতিসংঘের ওই সংস্থা বলেছে, 'এই অবিচারের উপযুক্ত প্রতিকার হবে ইমরান খানকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাকে ক্ষতিপূরণ ও অন্যান্য বিষয়াদির পাশাপাশি একটি কার্যকর অধিকার প্রদান করা।'

জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রম্নপ চলতি বছরের ২৫ মার্চ এই মতামত প্রকাশ করে। তবে এটি জনসম্মুখে আসে সোমবার। জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রম্নপ তাদের মতামতে বলেছে, 'ইমরান খানকে আটকের কোনো আইনি ভিত্তি ছিল না এবং মনে হচ্ছে রাজনৈতিক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করার উদ্দেশ্যে আটক করা হয়েছিল বলে (ওয়ার্কিং গ্রম্নপ) সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। সুতরাং শুরু থেকেই সেই প্রসিকিউশনটি আইনের ভিত্তিতে ছিল না এবং কথিত একটি রাজনৈতিক উদ্দেশে এটি করা হয়েছে।'

পাঁচজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে গঠিত জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রম্নপের মতামত শোনা বাধ্যতামূলক নয়। তবে তাদের এই মতামত বেশ গুরুত্ব বহন করে। ওয়ার্কিং গ্রম্নপ বলেছে, ইমরান খানকে যে আইনি সমস্যার মধ্যে ফেলা হয়েছে, সেটি মূলত তার এবং তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির বিরুদ্ধে 'অনেক বৃহত্তর দমন অভিযানের' অংশ। এতে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে ইমরান খানের দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করা হয়েছিল এবং তাদের নির্বাচনী সমাবেশগুলোকেও বাধাগ্রস্ত করা হয়েছিল। এছাড়া 'নির্বাচনের দিন ব্যাপক জালিয়াতি ও কারচুপির মাধ্যমে কয়েক ডজন সংসদীয় আসন চুরি' করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছে জাতিসংঘের এই ওয়ার্কিং গ্রম্নপ।

অবশ্য পাকিস্তান সরকার এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশটির নির্বাচন কমিশন গত ফেব্রম্নয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে কোনো ধরনের কারচুপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এর আগে গত বুধবার মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস (প্রতিনিধি পরিষদ) চলতি বছরের ফেব্রম্নয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়া সাধারণ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি প্রস্তাব পাস করে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই আমেরিকাকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে 'হস্তক্ষেপ' করার চেষ্টা করার অভিযোগ করে পাকিস্তান।

মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে পাকিস্তানের নির্বাচনে কথিত অনিয়মের বিষয়ে 'পূর্ণাঙ্গ ও স্বাধীন' তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পিটিআই পার্টিও নির্বাচনে তাদের জয়কে নস্যাৎ করার জন্য কারচুপি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে