ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেওয়া নিয়ে ইসরাইলকে হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, ইসরাইল যদি সতিই ইউক্রেনকে এই সমরাস্ত্র দেয়, তাহলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি ভূখন্ডকে। তথ্যসূত্র : আরটি
৩০ বছরের বেশি সময় আগে আমেরিকার কাছ থেকে আটটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছিল ইসরাইল। এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই ৯০১ পিএসি-২ ব্যাটারি মডেলের। গত এপ্রিল মাসে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, পুরনো হয়ে যাওয়ায় এই সমরাস্ত্রগুলো আর ব্যবহার করবে না দেশটির সেনাবাহিনী। এগুলোর স্থানে আনা হবে নতুন আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পর এই প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় কিয়েভ। এই ইসু্যতে আমেরিকা, ইসরাইল ও ইউক্রেনের মধ্যে সম্প্রতি কয়েক দফা আলোচনাও হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক দৈনিক 'ফিন্যান্সিয়াল টাইমস' এ নিয়ে প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুরনো এই আটটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রথমে আমেরিকায় পাঠাবে ইসরাইল, তারপর সেখান থেকে সেগুলো ইউক্রেনে পাঠানো হবে।
সোমবার জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়টি তোলেন ভাসিলি নেবেনজিয়া। তিনি বলেন, 'ইউক্রেনে যে কেউ যত শক্তিশালী অস্ত্রেই পাঠাক না কেন, তা ধ্বংস হবে। গত দুই বছরে ইউক্রেনে অনেক শক্তিশালী অস্ত্র পাঠিয়েছিল আমেরিকা ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। সেগুলোর প্রায় সবই ধ্বংস হয়েছে। আর একটি কথা আমি বলব, আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বের বাইরে কোনো নতুন রাষ্ট্র যদি ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা দেয়, সেক্ষেত্রে তার পরিণতি গুরুতর হবে।' তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন গত ১৪ জুন ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন- সেটাই একমাত্র সমাধানের পথ।
উলেস্নখ্য, পুতিন গত ১৪ জুন ঘোষণা দেন, ইউক্রেন যদি রাশিয়ার অধিকৃত দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারি থেকে শুরু করা বিশেষ সামরিক অভিযান বন্ধ করবে রাশিয়া।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী, যা এখনো চলছে। এই অভিযানের শুরু থেকে ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে আমেরিকা ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। পাশাপাশি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারিসহ রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব।
তবে আমেরিকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরাইল এই ইসু্যতে এ পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো পক্ষ অবলম্বনের ঘোষণা দেয়নি, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি। এ পর্যন্ত ইউক্রেনে কয়েক দফা সহায়তা পাঠিয়েছে ইসরাইল, তবে সেসব সহায়তার সবই ছিল খাদ্য, চিকিৎসা ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণ।