দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে যুক্তরাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন মার্কিন গোপন দলিল ফাঁস করে সাড়া ফেলে দেওয়া ওয়েবসাইট 'উইকিলিকস'র প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। গত সোমবার তাকে মুক্তি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। নিজের অপরাধ স্বীকার করার বিষয়ে অ্যাসাঞ্জ সম্প্রতি আমেরিকার সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি করেছেন, সেটির ধারাবাহিকতাতেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স
আমেরিকার 'জাতীয় প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ষড়যন্ত্রের' অভিযোগ আনা হয়েছিল ৫২ বছর বয়সি অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। আমেরিকা বলে আসছে, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের নথি ফাঁস করে বহু মানুষের জীবনকে হুমকিতে ফেলেছে উইকিলিকস।
গত পাঁচ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের কারাগার বন্দি থেকে আমেরিকায় প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিলেন অ্যাসাঞ্জ। আমেরিকার সঙ্গে আপস রফায় পৌঁছানোর পর তিনি মুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন বলে উইকিলিকস জানিয়েছে।
চুক্তি অনুযায়ী, অ্যাসাঞ্জকে আর আমেরিকার কারাগারে যেতে হবে না। আমেরিকায় যে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল, সেই অপরাধ তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন বলে ধরা হবে এবং যুক্তরাজ্যে কারাবন্দি থাকার সময়কে সাজা খাটা হিসেবে গণ্য করা হবে। ব্রিটিশ কারাগার থেকে মুক্ত অ্যাসাঞ্জ তার জন্মস্থান অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যাবেন বলে মার্কিন বিচার বিভাগের এক চিঠিতে জানানো হয়েছে।
'এক্স' পোস্টে উইকিলিকস লিখেছে, লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারের ছোট্ট কক্ষে ১৯০১ দিন কাটানোর পর অ্যাসাঞ্জ সোমবার মুক্তি পান। বিকালেই স্ট্যানস্টিড বিমানবন্দর থেকে একটি ফ্লাইটে তিনি যুক্তরাজ্য ছাড়েন। অ্যাসাঞ্জের একটি ভিডিও 'এক্সে' প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। সেখানে দেখা যায়, জিনস ও নীল শার্ট পরা অ্যাসাঞ্জ বিমানে উঠছেন।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের স্ত্রী স্টেলা মরিস অ্যাসাঞ্জ 'এক্স' পোস্টে সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, বছরের পর বছর ধরে তারা অ্যাসাঞ্জের পক্ষে সমর্থন যুগিয়ে গেছেন, যা তার মুক্তির দিনটিকে বাস্তবে পরিণত করেছে। অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে মামলায় যে ১৮টি অভিযোগ আনা হয়েছিল, চুক্তি অনুযায়ী তার একটিতে দোষ স্বীকার করে নেবেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা। বুধবার সেই আইনি প্রক্রিয়া সারা হবে নর্দার্ন মারিয়ানা আইল্যান্ডসের একটি আদালতে।