বছরখানেক আগে আমেরিকায় স্ট্রোকে আক্রান্ত করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া প্রখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক ও সমাজ বিশ্লেষক নোয়াম চমস্কি ব্রাজিলের একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন; সেখানে তার অবস্থার উন্নতির খবর পাওয়া গেছে।
৯৫ বছর বয়সি এই বুদ্ধিজীবীকে ব্রাজিলের সাও পাওলো ভর্তি করা হয়েছে। আমেরিকা থেকে দুই নার্সসহ একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ব্রাজিলে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার চমস্কির স্ত্রী ভ্যালেরিয়া চমস্কি তাকে হাসপাতালে ভর্তি তথ্য নিশ্চিত করেন।
২০২৩ সালের জুনে আমেরিকায় স্ট্রোক করেন চমস্কি। ব্রাজিলের সংবাদপত্র 'ফোলহা ডি সাও পাওলো'র বরাতে 'টাইম' জানিয়েছে, স্ট্রোক করার পর মার্কিন চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তাদের তেমন কিছুই করার নেই। তখন চমস্কিকে ব্রাজিলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তার স্ত্রী। ভ্যালেরিয়া নিজেও
ব্রাজিলের মেয়ে।
সাও পাওলো হাসপাতালে নেওয়ার পর চমস্কিকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। প্রতিদিনই সেখানে নিউরোলজিস্ট, স্পিচ থেরাপিস্ট ও পালমোনোলজিস্টরা তার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখছেন।
ফোলহা ডি সাও পাওলো জানিয়েছে, চমস্কির অবস্থার দ্রম্নত উন্নতি হয়েছে। শুরুতে আইসিইউতে ভর্তি হলেও এখন তাকে হাসপাতালের সাধারণ কেবিনে নেওয়া হয়েছে।
গত বছর স্ট্রোকের পর থেকে জনসম্মুখে না আসায় চমস্কির স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে নানা জল্পনা চলছিল। তার মৃতু্যর গুজবে অনেকে শোক প্রকাশ করে বিবৃতিও দিয়েছেন।
চলমান গাজা যুদ্ধ নিয়ে এই মার্কিন বুদ্ধিজীবীর কোনো বিশ্লেষণ বা মন্তব্য তার পাঠকরা পাননি। স্ট্রোক করার পর থেকে তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। তার শরীরের ডান পাশ অসাড় হয়ে গেছে।
গাজা যুদ্ধ নিয়ে কথা না বললেও এ সংক্রান্ত খবর ও ছবি যখন দেখছিলেন, তখন চমস্কি তার বাম হাত তুলে 'ক্ষোভ প্রকাশের ভঙ্গি' করেন।
ভাষাবিজ্ঞানে রূপান্তরমূলক তত্ত্বের পাশাপাশি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি, পুঁজিবাদ আর গণমাধ্যমের সমালোচনার জন্য ব্যাপক পরিচিত নোয়াম চমস্কিকে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত পন্ডিতদের একজন মনে করা হয়। বিশ্বের অনেকেই তাকে প্রতিবাদ আর স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে দেখেন। প্রভাবশালী এ অধিকারকর্মী ও সমালোচক মধ্যপ্রাচ্য থেকে মধ্য আফ্রিকা পর্যন্ত সবক্ষেত্রে মার্কিন নীতিকে বারবার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। তার বই ও প্রবন্ধগুলো বিশ্বের লাখো মানুষের কাছে জনপ্রিয়। তথ্যসূত্র : টাইম