ইসরাইলি আগ্রাসন

গাজায় হামাসের ফাঁদে পড়ে চার ইসরাইলি সেনা নিহত

পশ্চিম তীরে সংঘর্ষে হামাস কমান্ডার নিহত জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলেও হামলা

প্রকাশ | ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলেও ইসরাইল তাদের হামলা থামায়নি। মঙ্গলবারও তারা মধ্য ও দক্ষিণ গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ভবন বিধ্বস্ত হয়। ছবিটি মঙ্গলবার রাফাহ থেকে তোলা -আল-জাজিরা অনলাইন
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের পাতা ফাঁদে পড়ে চার ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও সাতজন। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম 'টাইমস অব ইসরাইল' মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হামাসের সদস্যরা একটি ভবনে বিস্ফোরক দিয়ে ফাঁদ পেতেছিল। সেখানে ইসরাইলি সেনারা প্রবেশের পরই ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর এটি ধসে পড়ে চার সেনা প্রাণ হারায়। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, এএফপি, রয়টার্স, এপি এই চারজনের মৃতু্যর মাধ্যমে গাজায় ইসরাইলের চলমান সামরিক আগ্রাসনে ৩০০ ইসরাইলি সেনার মৃতু্য হয়েছে। যার মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন। এই হিসাব ইসরাইলের। তবে হামাসের দাবি, নিহত ইসরাইলি সেনার সংখ্যা আরও অনেক বেশি। সর্বশেষ যে চার সেনা নিহত হয়েছে, তাদের সবাই 'গিভাতি ব্রিগেড'র গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্য ছিল। তাদের মধ্যে দুইজনের প্রশিক্ষণ সময়ও শেষ হয়নি। এর আগেই যুদ্ধের ময়দানে গিয়ে তাদের প্রাণ হারাতে হয়েছে। ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, এই সেনারা রাফাহর সাবোরা নামের একটি এলাকার 'সন্দেহজনক' ভবনে যায়। ভবনটিতে হামাস ফাঁত পেতে রাখতে পারে- এমন সন্দেহে প্রথমে সেখানে তারাই একটি বিস্ফোরক ছুড়ে মারে। যেন কোনো বিস্ফোরক থাকলে সেটিও বিস্ফোরিত হয়। তবে ওই সময় কোনো বিস্ফোরণ হয়নি। এরপর সেনারা এটিতে প্রবেশ করে। তিনতলা ওই ভবনটিতে দুই সেনা প্রবেশের পরই হঠাৎ সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনটি ধসে পড়ে চারজন নিহত ও সাতজন আহত হয়। যার মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর। আইডিএফ জানিয়েছে, পরে ভবনটির ভেতর তারা একটি সুড়ঙ্গ খুঁজে পায়। যার অর্থ- ভবনটিতে হামাসের যোদ্ধারা ছিল। পশ্চিম তীরে সংঘর্ষে হামাস কমান্ডার নিহত এদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হামাসের এক কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠনটি। সোমবার এক বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, রামালস্নার কাছের একটি গ্রামে তাদের কমান্ডারসহ চার যোদ্ধা নিহত হন। হামাসের ওই কমান্ডারের নাম মোহাম্মদ জাবের আবদো। পশ্চিমা সমর্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সদর দপ্তরের কাছেই ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। ইসরাইলি সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, তারা চারজনের একটি গ্রম্নপকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে। ইসরাইলি পুলিশ সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে কাফার নাইমা শহরে গেলে তারা পুলিশের গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার এবং তাদের গাড়ি দিয়ে চাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে ইসরাইলি বাহিনী এমন পদক্ষেপ নেয়। নিহতদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে ইহুদি বসতির একটি নিরাপত্তা ফাঁড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। গত ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পশ্চিম তীরে সহিংসতা বেড়েছে। বিশেষ করে সহিংস বিক্ষোভ ও ইসরাইলি গ্রেপ্তার অভিযানের সময় সংঘর্ষে হতাহতের সংখ্যাও বাড়ছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ৭ অক্টোবর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি গুলিতে ৫৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।