শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

আবদারের চাপে বিপাকে মোদি স্পিকার পদ নিয়ে টানাটানি

যাযাদি ডেস্ক
  ১২ জুন ২০২৪, ০০:০০
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ভারতে প্রধানমন্ত্রীর শপথের দিন অজিত পাওয়ারের এনসিপিকে নিয়ে বিজেপির 'ঘুম ছুটে' গিয়েছিল। শপথ গ্রহণের পরের দিনও চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টি ও একনাথ শিন্ডের শিবসেনা নরেন্দ্র মোদিকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। কারণ বিজেপি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তেলুগু দেশমকে বিমান মন্ত্রণালয় ছেড়ে দিলেও চন্দ্রবাবু নাইডু এখনো লোকসভার স্পিকারের পদের দাবিতে অনড়। পাল্টা চালে বিজেপি অন্ধ্রপ্রদেশেরই দলের সভানেত্রী ডি পুরন্দেশ্বরীর নাম স্পিকারের পদের জন্য এগিয়ে দিচ্ছে। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ

পুরন্দেশ্বরী তেলুগু দেশমের প্রতিষ্ঠাতা এনটি রাম রাও-এর মেয়ে। সেই হিসেবে তিনি চন্দ্রবাবুর শ্যালিকা। তার জন্য দুলাভাই নিজের দাবি থেকে সরে আসতে পারেন বলে বিজেপি নেতাদের আশা। উল্টো দিকে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে চন্দ্রবাবুকে বার্তা দেওয়া হয়েছে, তেলুগু দেশম স্পিকার পদের জন্য প্রার্থী দিলে কংগ্রেস সমর্থন করতে পারে।

রোববার চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টির দুই এমপি মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। রামমোহন নায়ডু পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি শপথ নেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। তেলুগু দেশমের দাবি ছিল অবকাঠামো সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। সেই দাবি মেনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তেলুগু দেশমকে বিমান মন্ত্রণালয় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রশেখর পেম্মাসানিকে গ্রামোন্নয়ন ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

এরপরেও চন্দ্রবাবু নাইডু লোকসভার স্পিকারের পদের দাবিতে অনড়। তার সঙ্গে এনডিএ-র আহ্বায়কের পদও দাবি করেছেন চন্দ্রবাবু। তার যুক্তি, অটলবিহারি বাজপেয়ি সরকারের সময়েও তেলুগু দেশমের জিএমসি বালাযোগীকে লোকসভার স্পিকারের পদ ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। অতীতের মতো এনডিএ-র আহ্বায়কের পদও দাবি করছেন চন্দ্রবাবু। বুধবার চন্দ্রবাবু অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেবেন। গত রোববার দিলিস্নতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন চন্দ্রবাবু। এই সৌজন্যের মধ্যেও টানাপড়েন অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে এনডিএ-তে বিজেপির আর এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক নীতিশ কুমারের জেডিইউ-ও স্পিকারের পদ পেতে আগ্রহী। কেন চন্দ্রবাবু ও নীতিশ, দু'জনেই লোকসভার স্পিকারের পদ চাইছেন? লোকসভায় তেলুগু দেশমের ১৬ ও জেডিইউ-এর ১২ জন এমপি রয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য মোদি সরকারের দুই দলেরই সমর্থন প্রয়োজন। নীতিশ-নাইডুর আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এনডিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহারের আঁচ পেলে বিজেপি তাদের দল ভেঙে দিতে পারে। দলছুট এমপিরা বিজেপিতে যোগ দিলে দলত্যাগ বিরোধী আইন অনুযায়ী তাদের এমপি পদ খারিজ করে দেওয়ার ক্ষমতা স্পিকারের হাতেই থাকে। এনডিএ থেকে সরে গেলেও স্পিকারকে পদ থেকে সরাতে লোকসভার ৫০ শতাংশ সদস্যের সমর্থনে প্রস্তাব আনতে হয়।

এরই মধ্যে বিজেপির চিন্তা বাড়িয়ে আরেক শরিক একনাথ শিন্ডের শিবসেনা জানিয়ে দিয়েছে, তাদেরও একটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ দিতে হবে। শুধু একটি প্রতিমন্ত্রীর পদে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে আসা শিন্ডের সেনারা খুশি নন। শিন্ডের দল লোকসভায় সাতটি আসনে জিতে এলেও তাদের দলের শুধু একজন এমপি, গণপতরাও প্রতাপরাও যাদবকে আয়ুষ মন্ত্রণালয়ের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। দলের এমপি শ্রীরঙ্গ বার্নে জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের পূর্ণমন্ত্রীর পদ চাই। শ্রীরঙ্গের বক্তব্য, 'সাত এমপি থাকা সত্ত্বেও আমাদের একটি মাত্র প্রতিমন্ত্রীর পদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এইচডি কুমারস্বামীর জেডিএস-এর দু'জন এমপি থাকলেও তারা একটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ পেয়েছে। বিহারের জিতনরাম মাঝি তার দলের একাই এমপি। তিনিও পূর্ণমন্ত্রীর পদ পেয়েছেন।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে