ইসরাইলি আগ্রাসন

গাজায় জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্রে হামলায় ৩৫ জন নিহত

স্কুলটিতে হামাসের একটি কম্পাউন্ড ছিল : দাবি ইসরাইলের নৃশংস অপরাধকে বৈধতা দিতে মিথ্যা বলে তারা : হামাস

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার একটি স্কুলে বৃহস্পতিবার ইসরাইলের বিমান হামলায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। নিহতরা স্কুলটিতে আশ্রয়ের খোঁজে এসেছিলেন বলে গাজার গণমাধ্যম জানিয়েছে। অপরদিকে, ইসরাইল বলছে- স্কুলটিতে হামাসের একটি কম্পাউন্ড ছিল, সেখানে হামলা চালিয়ে ৭ অক্টোবরের হামলার সঙ্গে জড়িত যোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে; যে হামলাটি আট মাস ধরে চলা যুদ্ধের সূচনা ঘটিয়েছিল। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা মধ্য গাজার নুসেইরাতে জাতিসংঘের ওই স্কুলে হামাসের একটি লুকানো কমান্ড পোস্ট ছিল, ইসরাইলের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন গাজার হামাস পরিচালিত সরকারের তথ্য দপ্তরের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবেত। তিনি বলেন, 'দখলদাররা কয়েক ডজন বাস্তুচু্যত মানুষের বিরুদ্ধে চালানো নৃশংস অপরাধকে বৈধতা দিতে বানানো গল্পের মাধ্যমে জনমতের কাছে মিথ্যা কথা বলে।' ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, যুদ্ধবিমানগুলোর হামলার আগে ইসরাইলে সামরিক বাহিনী বেসামরিকদের ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে পদক্ষেপ নিয়েছিল। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেছেন, একটা ইসরাইলি যুদ্ধবিমান থেকে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে স্কুলটির ওপরের তলার শ্রেণিকক্ষে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী দল দ্রম্নত ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ও আহতদের সরিয়ে পাশের হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করে। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে বিধ্বস্ত ক্লাসরুম ও মর্গের সামনে পড়ে থাকা লাশের সারি দেখা গেছে। হামলায় আহত এক নারী চিৎকার করে বলছিলেন, 'অনেক যুদ্ধ হয়েছে! আমরা অসংখ্যবার উচ্ছেদ হয়েছি। আমার সন্তানরা যখন ঘুমাচ্ছিল, তখন তারা তাদের হত্যা করেছে।' এর আগে ইসরাইল বুধবার গাজার মধ্যাঞ্চলে হামাসের বিরুদ্ধে একটি নতুন অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে, এখানেই বিমান হামলায় বহু লোক নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস এবং ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে, বুধবার তারা গাজাজুড়ে ইসরাইলি বাহিনীগুলোর সঙ্গে বন্দুক লড়াই করেছে আর শত্রম্নদের অবস্থানগুলো লক্ষ্য করে ট্যাংক বিধ্বংসী রকেট ও গোলা ছুড়েছে। গত বুধবার গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দিয়ের আল-বালাহর শুহাদা আল-আকসা হাসপাতালে ইসরাইলি হামলায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে দুটি শিশু আছে। শিশু দুটি তাদের মা-সহ নিহত হয়েছে। গাজায় যে দুটি হাসপাতাল এখনো সচল আছে, এই শুহাদা আল-আকসা এর একটি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলার সময় অনেকে পালাতে পারলেও ওই মা ও শিশ দুটি পালাতে পারেনি। শিশু দুটির বাবা আবু মোহাম্মদ আবু সাইফ বলেন, 'এটি যুদ্ধ না, এটি ধ্বংস যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।' ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের পূর্বাঞ্চল এবং গাজার কেন্দ্রস্থলে দেইর আল-বালাহ শহরের ওপর 'অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ' নিয়েছে এবং সেখানে অসংখ্য ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানকার অধিবাসীরা তীব্র বোমাবর্ষণের কথা জানিয়েছেন এবং দাতব্য সংস্থা 'মেদেসিন্স সান্স ফ্রন্তিয়েরেস' (এমএসএফ) বলেছে, মঙ্গলবার থেকে অন্তত ৭০টি মৃতদেহ- যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু; একটি স্থানীয় হাসপাতালে আনা হয়েছে। এমএসএফ বলেছে, তাদের চিকিৎসা দল গাজার কেন্দ্রস্থলে টিকে থাকা একমাত্র কার্যকরী স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা-সংবলিত দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালের পরিস্থিতি 'কল্পনাতীত' হিসেবে বর্ণনা করেছে।