রোববার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১
ভারতে সরকার গঠন

সরকারের 'রাশ' ছাড়বে না বিজেপি

মন্ত্রিত্বের সংখ্যায় কিছুটা নমনীয় হলেও শরিক দলগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেবে না
যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
নরেন্দ্র মোদি, চন্দ্রবাবু নাইডু ও নীতিশ কুমার

শক্তিক্ষয় হয়েছে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে দল। তাই বলে সরকারের রাশ কোনোভাবেই নিজেদের হাত থেকে ছাড়তে নারাজ মোদি-শাহ। সংখ্যার বিচারে হয়তো শরিক দলগুলোকে আগের চেয়ে বেশি আসন ছাড়তে হবে। কিন্তু সরকারের চালিকাশক্তি যে মন্ত্রণালয়গুলো, সেগুলো নিজেদের হাতেই রাখতে চান মোদি-শাহ। তথ্যসূত্র : ইনডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি, রয়টার্স প্রথম দুই মোদি সরকারের ক্ষেত্রে শরিকদের অংশগ্রহণ ছিল নামমাত্র। সংখ্যাধিক্যের বলে শরিকদের ওপর স্রেফ 'দাদাগিরি' চালিয়েছেন মোদি-শাহ। সুযোগ বুঝে এবার পাল্টা দরকষাকষি শুরু করেছেন শরিকরা। কেন্দ্রে সরকার গড়তে বিজেপির চার শরিক খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক, চন্দ্রবাবু নাইডু। তার দাবি, অন্তত চারটি পূর্ণ মন্ত্রিত্ব এবং স্পিকারের পদ। দুই, নীতিশ কুমার। তার দাবি রেলসহ তিন পূর্ণ মন্ত্রিত্ব, একাধিক প্রতিমন্ত্রী এবং এনডিএর একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন নীতিশ নিজেই। তিন নম্বর গুরুত্বপূর্ণ লোক হলেন- একনাথ শিন্ডে। তার বিশেষ দাবি নেই। তবে তার চাই- দুই পূর্ণ মন্ত্রিত্ব। আর চার নম্বর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেন চিরাগ পাসওয়ান। তার দাবি, একটি পূর্ণ মন্ত্রী ও একটি প্রতিমন্ত্রীর পদ। বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় সংখ্যার বিচারে তারা খানিকটা হলেও নমনীয়। তবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ছাড়া হবে না। টিডিপিকে যেমন স্পিকারের পদ ছাড়া হবে না। খুব বেশি হলে ডেপুটি স্পিকারের পদ দেওয়া হতে পারে। জেডিইউয়ের খাতায় রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যানের পদ আগে থেকেই আছে। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত, কোনো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ছাড়া হবে না শরিকদের। অর্থ, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না। চন্দ্রবাবু নাইডুর দাবি সড়ক পরিবহণ, শিক্ষা, গ্রামোন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। জেডিইউ চায় রেলসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। কিন্তু মোদি-শাহদের স্পষ্ট বক্তব্য, সড়ক পরিবহণ বা গ্রামোন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর কাউকে ছাড়া হবে না। রেল মন্ত্রণালয়ও নিজেদের হাতেই রাখতে চায় গেরুয়া শিবির। তবে এখনো রেল, পশু পালন, শিক্ষা নিয়ে আলোচনা চলছে দুই শরিকের সঙ্গে। উলেস্নখ্য, লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এবার জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি। দলটি লোকসভায় নির্বাচন করেছিল 'এনডিএ' জোট হিসেবে। তবে 'এনডিএ' নামের জোটটিতে যেসব দল রয়েছে, তারা সরকার গঠনের আগে বিজেপির কাছে বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ছাড়াও তাদের রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে মোদির বিজেপি এককভাবে ২৪০টি আসন পেয়েছে। তবে ভারতের সংবিধান অনুযায়ী, সরকার গঠন করতে চাইলে অন্তত ২৭২টি আসনে বিজয়ী হতে হবে। বিজেপি একা এই ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করতে না পারলেও দলটির জোট 'এনডিএ' ২৯৩টি আসন পেয়েছে। ফলে তারা সহজেই জোট সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। মোদি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী ও জেডি (ইউ) নেতা নীতিশ কুমার এবং টিডিপির নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু হঠাৎ করে 'কিংমেকারে' পরিণত হন। কারণ, এই দুই নেতার দল যথাক্রমে ১৬ ও ১২টি আসনে জিতে নেয়। তাদের দলের ২৮টি আসন মোদির জোট সরকার গঠন করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে