শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১
লোকসভা নির্বাচন

পরপর দুই নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কংগ্রেস

রাহুল ও কংগ্রেসের হাইকমান্ডের ঐক্য ও 'টিমওয়ার্ক'র ফসল এবারের নির্বাচনের ফল
যাযাদি ডেস্ক
  ০৫ জুন ২০২৪, ০০:০০
'ভারত জোড়ো' পদযাত্রায় রাহুল -ফাইল ছবি

ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ফল মঙ্গলবার ঘোষণা করা হয়েছে। এতে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৯৯টি আসনে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থীরা এবং সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে এই আসন সংখ্যা আরও বাড়বে- এমন ইঙ্গিতও পাওয়া যাচ্ছে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ

দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, বিগত ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের দুই নির্বাচনে যে ভরাডুবি ঘটেছিল কংগ্রেসের, এবারের নির্বাচনে সেই ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে কার্যত ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রায় দেড়শ' পুরনো এই সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল। ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক দলটির পতন শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের নির্বাচন থেকে। পরে সেই পতন আরও গতি পায় ২০১৯ সালের নির্বাচনে।

ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার মোট আসন সংখ্যা ৫৪৩টি। কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়, তাহলে অন্তত ২৭২টি আসনে জয়ী হতে হয়। ২০০৯ সালের নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করেছিল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন জোট 'ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স' (ইউপিএ) সেই নির্বাচনে কংগ্রেস একাই জয়ী হয়েছিল ২০৬টি আসনে। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে তৎকালীন 'মোদি-ঝড়ে' কার্যত উড়ে যায় কংগ্রেস। সেই নির্বাচনে মাত্র ৪৪টি আসনে জয় পেয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। পরে ২০১৯ সালের নির্বাচনে লোকসভায় ছয় আসন বাড়াতে সক্ষম হয় কংগ্রেস। সেবারের নির্বাচনে ৫২টি আসনে জয় পেয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থীরা।

দুই নির্বাচনেই কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট ছিলেন- রাহুল গান্ধী। দলের ফল স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেসের নেতৃত্ব ও রাহুলের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে প্রশ্নের মুখে ফেলে। তবে রাহুলের জন্য সবচেয়ের বড় বিপর্যয়কর ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালের নির্বাচনে। সেবার নিজের 'পারিবারিক আসন' বলে পরিচিত আমেথিতে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী এবং সাবেক টিভি সিরিয়াল অভিনেত্রী স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। কেরালার ওয়ানাড়েতে জয়ী হওয়ার সুবাদে সেবার কোনো রকমে লোকসভায় নিজেকে টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হন রাহুল।

এরপর ২০১৯ সালের নির্বাচনের ভরাডুবির দায় নিয়ে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধী। এরপর প্রায় আড়াই বছর কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন তার মা ও কংগ্রেসের সাবেক শীর্ষ নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবরে কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি হন মলিস্নকার্জুন খাড়্‌গে।

সভাপতির পদ ছাড়ার পর দলকে সংগঠিত করতে আরও মনযোগ দেন রাহুল। সারাদেশে কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে ২০২৩ সালে 'ভারত জোড়ো' কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। এই কর্মসূচির সময় ভারতের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে নেতাকর্মীদের পায়ে হেঁটে লংমার্চ করেছেন রাহুল, অজস্র সভা-সমাবেশ করেছেন।

ভারতের রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, রাহুল ও কংগ্রেসের হাইকমান্ডের ঐক্য ও 'টিমওয়ার্ক'র ফসল এবারের নির্বাচনের ফল, যা মূলত কংগ্রেসের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে