শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১
লোকসভা নির্বাচন

জরিপের ফল হবে সম্পূর্ণ বিপরীত : সোনিয়া

এক্সিট পোল দুই মাস আগেই তৈরি, এগুলো বিশ্বাস করি না : মমতা লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জরিপে ভিন্ন চিত্র!
যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে বুথ ফেরত জরিপের অধিকাংশই ইঙ্গিত দিয়েছে, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। কোনো কোনো জরিপে এটাও ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, বিজেপি একাই ৩৫০-৩৭৫ আসন পেতে পারে। এনডিএ '৪০০ পার' করে যাবে। কংগ্রেসসহ বিজেপিবিরোধী জোট 'ইনডিয়া' আশানুরূপ ফল করবে না বলেও ইঙ্গিত দিয়েছে বুথ ফেরত জরিপগুলো। কিন্তু সেই সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিলেন কংগ্রেস নেত্রী তথা রাজ্যসভার সদস্য সোনিয়া গান্ধী। সোমবার তিনি স্পষ্ট জানান, বুথ ফেরত জরিপের সম্পূর্ণ বিপরীত ফল হবে। উলেস্নখ্য, আজ (মঙ্গলবার) লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি, জি-নিউজ, ইনডিয়ান এক্সপেস

তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধিকে তার শততম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া। সেই অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কংগ্রেস নেত্রী বলেন, 'আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড সি।' তিনি বলেন, 'আমরা খুব আশাবাদী যে, বুথ ফেরত জরিপে যা দেখিয়েছে, আমাদের চূড়ান্ত ফল তার সম্পূর্ণ বিপরীত হবে।'

শুধু সোনিয়া নন, বুথ ফেরত জরিপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জোট 'ইনডিয়া'র অন্য নেতারাও। বুথ ফেরত জরিপ নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, '২০১৪ সালে আমরা ৩৪টি আসন জিতেছিলাম। সে বারও এক্সিট পোল আমাদের এতগুলো আসন জেতার কথা বলেনি। এ বার আমরা তার থেকেও ভালো ফল করব।'

এক্সিট পোল দুই মাস আগেই তৈরি

এগুলো বিশ্বাস করি না : মমতা

এদিকে, সোনিয়ার মতো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, তিনি এসব জরিপ মানতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, এই এক্সিট পোলে তিনি বিশ্বাস করেন না। তার ভাষায়, এই এক্সিট পোল (বুথ ফেরত জরিপ) দুই মাস আগেই তৈরি। এগুলো সব বিজেপির তৈরি করা।

মমতা বলেন, '২০১৬, ২০১৯ সাল ও ২০২১ সালের এক্সিট পোল দেখেছি। কোনোটাই মেলাতে পারিনি, কারণ এগুলো সব বিজেপির তৈরি। মিডিয়াকে খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। দুই মাস আগেই এই এক্সিট পোলগুলো তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সেই কোম্পানিটাও বিজেপির কোম্পানি।' তিনি আরও বলেন, 'আমি অন্য রাজ্যের বিষয়ে বলতে পারব না, কারণ আমার অন্য রাজ্য নিয়ে ধারণা নেই। তবে অখিলেশরা ভালো করবেন, তেজস্বীরা ভালো করবেন, স্ট্যালিনরা ভালো করবেন। উদ্ধবরা ভালো করবেন। যেখানে যেখানে আঞ্চলিক দল রয়েছে, তারা ভালো ফল করবে। যেই-ই আসুক না কেন, খুব বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আসবে না।'

ইনডিয়া জোটের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা নিয়ে মমতা বলেন, 'আমি এ রকম কোনো কথা বলতে পারি না। অন্য রাজ্যের তথ্য নেই আমার কাছে, কিন্তু নিজের রাজ্যের কথা বলতে পারি। যেভাবে আমরা গরমে কাজ করেছি। সিটগুলো নিয়ে পর্যন্ত বলছে, এই সিটে হারছে, ওই সিটে হারছে। তার মানে কি বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। জানল কী করে কোন সিটে কে জিতছে, কে হারছে।'

মমতা আরও বলেন, 'ভোটটা যদি মেশিনেই হয়, ভোটটা যদি গোপনেই হয়, তবে জানল কী করে? আমরা জানার আগে, কাউন্টিং (গণনা) হওয়ার আগে মিডিয়া কী করে বলছে- কোন সিটে কে জিতবে, কে হারবে। আমি এই মিডিয়ার ক্যালকুলেশন মানি না। আমি আমাদের কর্মীদের বলব, শক্তিশালী থাকতে, ভালো করে কাউন্টিং করতে। যা সিট দেখিয়েছে মিডিয়া, তার আবল সিট যদি জিততে না পারি, তখন দেখবেন। প্রত্যেকটা সিট আমরা জিতব।'

লোকসভা ভোটের ফল নিয়ে কৃত্রিম

বুদ্ধিমত্তার জরিপে ভিন্ন চিত্র!

অন্যদিকে, ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে সব বুথ ফেরত জরিপ যখন বিপুল ব্যবধানে ক্ষমতাসীন বিজেপিকে এগিয়ে রাখছে, তখন চাঞ্চল্যকর সমীক্ষা করল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-এআই। ভারতে এই প্রথম কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বুথ ফেরত সমীক্ষা করাল সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ। সংস্থার দাবি, ভারতজুড়ে প্রায় ১০ কোটি ভোটারের বক্তব্য খতিয়ে দেখে এই সমীক্ষা করেছে এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স)।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে করা জি-নিউজের এই সমীক্ষা ভারতের বেশিরভাগ সংস্থার করা বুথ ফেরত সমীক্ষার থেকে অনেকটাই আলাদা। এআই যা ফলের আভাস দিচ্ছে, সেটা বাস্তব বলে বেশ অস্বস্তিতে পড়ে যেতে পারে বিজেপি। কারণ অধিকাংশ এক্সিট পোল যেখানে এনডিএর ৩৫০-৪০০ আসন পাওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে, সেখানে এআই সমীক্ষার পূর্বাভাস বলছে, ক্ষমতায় ফিরলেও খুব স্বস্তিতে থাকবে না 'গেরুয়া' শিবির। বরং ২০১৯-এর থেকে অনেকটাই কমবে এনডিএর আসন সংখ্যা।

এআই-এর সমীক্ষা বলছে, এনডিএ পেতে পারে ৩০৫-৩১৫ আসন। বিজেপি কত আসন পাবে সেটা আলাদা করে না বলা হলেও সমীক্ষায় যা ইঙ্গিত তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে বেগ পেতে হবে গেরুয়া শিবিরকে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে ৫০-৫৫ আসন দেওয়া হয়েছে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজস্থান, কর্ণাটক বিহারেও ধাক্কা খাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিহারে ১৫-২০ আসন পেতে পারে বিজেপি।

বিরোধী শিবিরের জন্যও একই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র এনডিএ-কে দেওয়া হচ্ছে ২৬-৩৪, বিরোধী শিবির পাচ্ছে ১৫-১৮ আসন। সব মিলিয়ে ইনডিয়া জোট ১৮০-১৯৫ আসন পেতে পারে, তৃণমূল এর বাইরে। তৃণমূলের আসন যোগ করলে ইনডিয়া জোট অনায়াসে পৌঁছে যাবে ২০০-এর ওপারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে