শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
ইসরাইলের সঙ্গে সংঘাত

হামাসের রকেটে কাঁপল তেল আবিব

রাফাহ থেকে ছোড়া রকেটে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি ইসরাইলি সেনা হত্যা ও আটকের দাবি হামাসের ইসরাইলের নতুন আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের
যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ মে ২০২৪, ০০:০০
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের রকেট হামলায় রোববার ইসরাইলের হার্জলিয়ায় একটি বাসভবনের কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় -রয়টার্স অনলাইন

গত প্রায় চার মাসের মধ্যে প্রথমবার ইসরাইলের তেল আবিবে বড় ধরনের রকেট হামলা চালিয়েছে হামাস। রোববার গাজা থেকে এসব রকেট ছোড়া হয় বলে জানিয়েছে হামাস। হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস তাদের 'টেলিগ্রাম' চ্যানেলে এক বিবৃতিতে বলেছে, 'বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইহুদিবাদীদের গণহত্যার' জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। হামাসের 'আল-আকসা' টিভি জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে এসব রকেট ছোড়া হয়েছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা, বিবিসি

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকা থেকে অন্তত আটটি রকেট ছোড়া হয় এবং বেশ কয়েকটিকে আটকানো হয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

হামলার সময় হার্জলিয়া এবং পেতাহ টিকভাসহ অন্য শহরে ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতামূলক সাইরেন বাজানো হয়েছিল। ইসরাইলি গণমাধ্যম 'হার্জলিয়ার' একটি ভবনের বাগানে রকেটের খন্ডের ফুটেজ প্রকাশ করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা গেছে, কেফার সাবার কেন্দ্রীয় শহরের কাছে খোলা জায়গায় রকেট পড়ে একটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

গাজায় ইসরাইলি সেনা আটকের দাবি হামাসের

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস গাজার জাবালিয়া থেকে ইসরাইলি সেনা আটকের দাবি করেছে। হামাসের মুখপাত্র আবু উবাইদা এক অডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তার বার্তাটি প্রচার করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম 'আল-জাজিরা'। এতে তিনি বলেন, 'আমাদের যোদ্ধারা শনিবার ইহুদিবাদী সেনাদের একটি দলকে কৌশলে সুড়ঙ্গে নিয়ে আসে এবং তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় যোদ্ধারা। ইসরাইলি সেনাদের ওই দলটির কয়েকজনকে হত্যা, আহত এবং আটক করে সেখান থেকে চলে আসে।'

তবে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) রোববার হামাসের এই দাবি অস্বীকার করেছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, সেনাদের আটক করার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

কতজন সেনাকে হামাসের যোদ্ধারা আটক করেছেন, সে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানাননি আবু উবাইদা। তবে হামাস একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীর পোশাক পরা এবং রাইফেলসহ একটি ব্যক্তিকে সুড়ঙ্গের ভেতর টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তার শরীর রক্তে ভেজা।

এই ভিডিওটির সত্যতা এবং ভিডিওতে যে ব্যক্তিকে (সেনা) দেখা যাচ্ছে, তার পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শনিবার খবরে বের হয় হামাস ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যে আবারও জিম্মি চুক্তির আলোচনা শুরু হবে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই এই অডিও বার্তা প্রকাশ করেন আবু উবাইদা।

নতুন আলোচনা প্রত্যাখ্যান হামাসের

অবরুদ্ধ গাজা অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসতে চেয়েছে ইসরাইল। তবে হামাস বর্বরদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ নেতা ওসামা হামদান।

আগামী মঙ্গলবার (২৮ মে) গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুর খবর ইসরাইলি মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। এ সময় ইসরাইলের সঙ্গে এমন যুদ্ধবিরতির আলোচনার দরকার নেই বলে মন্তব্য করেন ওসামা হামদান। শনিবার 'আল-জাজিরা'কে (আরবি) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামদান বলেন, গাজা থেকে যত দ্রম্নত সম্ভব ইসরাইলের সেনাদের প্রত্যাহার এবং সব ধরনের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। তিনি জানান, চলতি মাসের প্রথম দিকে হামাস যুদ্ধবিরতির জন্য কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের দেওয়া একটি প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু ইসরাইল এই প্রস্তাবে দ্বিমত পোষণ করে।

হামদান বলেন, 'ইসরাইলের সঙ্গে আমাদের নতুন করে আলোচনার দরকার নেই। কারণ হামাস আগেই যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হয়েছিল; যা ইসরাইল প্রত্যাখ্যান করেছে। তাই এই আলোচনার অর্থ হলো গাজায় আগ্রাসন চালিয়ে রাখার জন্য ইসরাইলকে আরও সময় দেওয়া।'

উলেস্নখ্য, ইসরাইল হামাসকে যে নতুন প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা উলেস্নখ নেই। বরং বলা হয়েছে, গাজায় কয়েক মাসের যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইল আবার যুদ্ধ শুরু করতে পারবে। ইসরাইল হামাসকে ধ্বংস করার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ বন্ধ করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে