ইসরাইলি হাসপাতালে ফিলিস্তিনি বন্দিদের শেকলে বেঁধে নির্যাতন

রোগীদের চিকিৎসা বঞ্চিত রাখা হচ্ছে

প্রকাশ | ২৩ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরাও
ইসরাইলে হাসপাতালের বেডে গাজার ফিলিস্তিনি বন্দিদের শেকল পরিয়ে, চোখ বেঁধে রাখা হয়। কখনো কখনো তাদের নগ্ন করে রাখা হয় এবং ন্যাপি পরতে বাধ্য করা হয়। বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছেন খোদ ইসরাইলি চিকিৎসাকর্মীরা। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে এমন আচরণ নির্যাতনেরই সামিল বলে বর্ণনা করেছেন এক চিকিৎসক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, কীভাবে একটি সামরিক হাসপাতালে ব্যথানাশক দেওয়া ছাড়াই 'নিয়মিতভাবে' ফিলিস্তিনি বন্দিদের অস্ত্রোপচার করা হয়। এভাবে অস্ত্রোপচারের কারণে তাদের অসহনীয় ব্যথা সহ্য করতে হয়। আরেকজন চিকিৎসকও জানান, একটি সরকারি হাসপাতালে গাজার ফিলিস্তিনি বন্দিদের অস্ত্রোপচারের সময় 'খুব সীমিতভাবে' ব্যথানাশক ব্যবহার করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি আরও জানান, অস্থায়ী সামরিক স্থাপনায় আটক গুরুতর অসুস্থ রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা করা থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। কারণ, সরকারি হাসপাতালগুলো তাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া এবং চিকিৎসা দিতে ইচ্ছুক নয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীর তুলে নিয়ে যাওয়া এক বন্দি জানান, তার পায়ের একটি ক্ষতস্থানের চিকিৎসা করতে দেওয়া হয়নি। সে কারণে শেষে তার পা-ই কেটে ফেলতে হয়েছিল। ইসরাইলের সামরিক বাহিনী অবশ্য বন্দি ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে হাসপাতালে এমন আচরণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সেখানে রোগীদের যথাযথভাবে এবং সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা করা হয়। ইসরাইলের একটি সামরিক হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন এক চিকিৎসক রোগীদের চিকিৎসা বঞ্চিত রাখার কারণে হাত কিংবা পা কেটে ফেলতে হওয়ার মতো ঘটনার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে গার্ডদের রোগীদের শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা কিংবা অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাকে অমানবিক বলে তিনি অভিহিত করেছেন। চিকিৎসাক্ষেত্রে বন্দিদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে বিবিসির দুইজন তথ্যদাতার (হুইসেল বেস্নায়ার) সঙ্গে কথা বলেছে। এই দুইজনের কেউই তাদের নাম প্রকাশ করেননি। তারা যে তথ্য দিয়েছেন, তা গত ফেব্রম্নয়ারিতে প্রকাশিত হয় ইসরাইলে 'ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস' এর একটি প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, ইসরাইলের নাগরিক এবং সামরিক বন্দিশালাগুলো 'প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ চরিতার্থ করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে'। বন্দিদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে- বিশেষ করে তাদের স্বাস্থ্যের অধিকার। ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে সেডি তেমান সামরিক ঘাঁটির ফিল্ড হাসপাতালে অসুস্থ ও আহত বন্দিদের চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর অক্টোবরে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাস হামলা চালানোর পর ইসরাইলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওই ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে। বিশেষত গাজার বন্দিদের চিকিৎসার জন্যই ওই হাপাতাল স্থাপন করা হয়। কারণ, সরকারি কিছু হাসপাতাল এবং চিকিৎসাকর্মীরা হামাসের হামলার দিন আটক হওয়া যোদ্ধাদের চিকিৎসা করতে ইচ্ছুক ছিল না।