শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
গাজায় যুদ্ধাপরাধ

আইসিসির পরোয়ানা নিয়ে মিত্রদের সঙ্গে বিতন্ডায় ফ্রান্স

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির উদ্যোগে 'স্তম্ভিত' মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষুব্ধ নেতানিয়াহুও
যাযাদি ডেস্ক
  ২২ মে ২০২৪, ০০:০০
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন ইসু্যতে বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্স ও পশ্চিমা দেশগুলো। আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যালান্ত এবং হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন। সোমবার তিনি জানান, নেতানিয়াহু ও ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের গাজায় 'যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের' জন্য দায় রয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে। তথ্যসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি

ফ্রান্স গ্রেপ্তারি পরোয়ানাকে সমর্থন জানিয়ে বলছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, এর স্বাধীনতা এবং সব পরিস্থিতিতে দায়মুক্তির বিরুদ্ধে লড়াইকে সমর্থন করে ফ্রান্স। তবে ইসরাইলের পশ্চিমা মিত্র, বিশেষ করে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইতালি ফ্রান্সের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে। জার্মানির পররাষ্ট্র দপ্তর সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছে, হামাস ও ইসরাইলের নেতাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 'সমীকরণের ভুল ধারণা তৈরি করেছে।' ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।

আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির

উদ্যোগে 'স্তম্ভিত' বাইডেন

গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে নেদার?ল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) হামাসের শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জমা পড়ায় 'স্তম্ভিত' বোধ করছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আইসিসির শীর্ষ কৌঁসুলি করিম আসাদ আহমেদ খানের (করিম খান) দপ্তর থেকে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ঘটনাকে 'অত্যন্ত আপত্তিকর' বলেও উলেস্নখ করেছেন বাইডেন।

সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, 'আমি স্তম্ভিত। আরেকটি কথা আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই- আইসিসির প্রসিকিউটর যাই করুন না কেন, তার মনে রাখা উচিত, হামাস ও ইসরাইলকে কখনো এক পালস্নায় বিবেচনা করা যায় না। এই দুইয়ের মধ্যে কোনো সাদৃশ্য নেই। ইসরাইলকে সবসময় নিরাপত্তাগত হুমকির মোকাবিলা করতে হয় এবং এ কারণেই আমরা সবসময় ইসরাইলের পাশে থাকব।'

বাইডেনের বিবৃতিকে অনুসরণ করে আইসিসির শীর্ষ কৌঁসুলির কঠোর সমালোচনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বিস্নংকেনও। এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'গাজা উপত্যকা ও মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনে এই উদ্যোগ তো কোনো কাজে আসবেই না, উপরন্তু এটি সংকটকে আরও জটিল করে তুলতে পারে এবং একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তির সম্ভাবনা এবং মানবিক সহায়তার প্রবাহকে বিপদগ্রস্ত করতে পারে।'

বিস্নংকেন আরও জানান, ইসরাইল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং আগামী সপ্তাহে শীর্ষ প্রসিকিউটর করিম খানের ইসরাইল সফরের সূচিও ছিল। কিন্তু সেই সফরের আগেই ইসরাইল ও হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন করিম খান।

এদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে হামাসের শীর্ষ তিন নেতার সঙ্গে নিজের এবং ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জমা পড়ায় ব্যাপক ক্ষুব্ধ হয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-ও।

সোমবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে হিব্রম্ন ভাষায় জারি করা এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, 'গণতান্ত্রিক ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী-প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে উগ্রপন্থি খুনিদের সঙ্গে এক সারিতে বিবেচনা করায় ইসরাইল হতভম্ব, হতাশ এবং ক্ষুব্ধ। ইসরাইলের নেতৃত্বকে হামাসের সমপর্যায়ের নামিয়ে আনা একটি হঠকারি এবং চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে