শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১
বললেন বাইডেন

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে না ইসরাইলি বাহিনী

'গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়, আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি' গাজায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি, শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত
যাযাদি ডেস্ক
  ২২ মে ২০২৪, ০০:০০
শুধু গাজা নয়, অধিকৃত পশ্চিম তীরেও নির্বিচারে হত্যাকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। মঙ্গলবার ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি বাহিনী বলেছে, তারা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নিয়োজিত ছিল। জেনিন শহরে ইসরাইলি বাহিনীর সাঁজোয়া যানের এই ছবিটি গতকাল (মঙ্গলবার) তোলা হয়েছে -রয়টার্স অনলাইন

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জোরালোভাবে ইসরাইলের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছেন। ফিলিস্তিনপন্থি প্রতিবাদকারীদের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেছেন, গাজায় হামাসের 'জঙ্গিদের' বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা সংঘটিত করছে না। সোমবার হোয়াইট হাউসে 'ইহুদি আমেরিকান হেরিটেজ মাস' অনুষ্ঠানে বাইডেন বলেন, 'গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি।' তথ্যসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আল-জাজিরা

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখন্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। টানা সাত মাসের বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ক্ষোভ বাড়ছে। এমনকি ইসরাইল গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠছে। তবে ইসরাইলের পক্ষে জোরালোভাবে অবস্থান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরাইলি বাহিনী গণহত্যা করছে না এবং গাজায় যা হচ্ছে তা গণহত্যা নয়।

তবে গাজায় ইসরাইলি গণহত্যা নিয়ে ফিলিস্তিনিপন্থিদের কাছ থেকে প্রতিবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন বাইডেন। এসব বিক্ষোভকারী ইসরাইলের প্রতি তার অবিচল সমর্থনের জন্য বাইডেনকে 'জেনোসাইড জো' হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সোমবার হোয়াইট হাউসের ওই ইভেন্টে বাইডেন গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার কথা সামনে এনে ইসরাইল নিজেই 'ভিকটিম' বলে জোর দেন। তিনি বলেন, ইসরাইলিদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য আমেরিকার সমর্থন 'লোহার আবরণের মতো দৃঢ়'। তিনি বলেন, 'আমরা হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং হামাসের বাকি কসাইদের খুঁজে বের করতে ইসরাইলের সঙ্গে আছি। আমরা হামাসকে পরাজিত করতে চাই। আমরা ইসরাইলের সঙ্গে কাজ করছি, যাতে হামাসকে পরাজিত করা যেতে পারে।'

গাজায় হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের মধ্যে যারা অসুস্থ, বয়স্ক ও আহত তাদের মুক্তির জন্য ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে চলা আলোচনা স্থবির হয়ে আছে, কিন্তু বাইডেন তাদের মুক্তির চেষ্টায় ক্ষান্ত না দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, 'যত কঠিনই হোক না কেন, আমরা তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছি, বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছি।' বাইডেন গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিরও আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে, গত রোববার মোরহাউস কলেজে নিজের প্রারম্ভিক বক্তৃতায়ও বাইডেন এটির পুনরাবৃত্তি করেন।

গাজায় দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি

শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলা থামছেই না। সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা হামলায় একের পর এক যাচ্ছে প্রাণ। আহতের সারিটাও দীর্ঘ হচ্ছে। দখলদার দেশটির বর্বর হামলায় আরও শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত হাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬২ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার। আর নিখোঁজ হয়েছেন অনেকে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গত সোমবার বার্তা সংস্থা 'আনাদলু' এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৫ হাজার ৫৬২ জনে পৌঁছেছে। হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৭৯ হাজার ৬৫২ জন। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের হামলায় ১০৬ জন নিহত এবং ১৭৬ জন আহত হয়েছেন। উদ্ধারকারীরা পৌঁছতে না পারায় অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন।

গত বছরের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখে ইসরাইলে এই দশকের সবচেয়ে বড় হামলা চালায় হামাস। এর পরপরই গাজায় বিমান হামলা ও স্থল হামলা শুরু করে ইসরাইল। সাত মাসের বেশি সময় ধরে চলা আগ্রাসনে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত ৭৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এই গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজার ২২ লাখ অধিবাসী দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রম্নত ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে বিশ্বকে জবাবদিহি করতে হবে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, গাজার রাফাহ শহরে ইসরাইল বড় ধরনের স্থল অভিযান চালালে আমেরিকা দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে