আবগারি মামলায় গ্রেপ্তার ভারতের রাজধানী দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আবেদন মামলায় ইডির কাছে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের দায়ের করা মামলা কোনো সাধারণ মামলা নয়, মঙ্গলবার শুনানিতে এমনই মন্তব্য করেছে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ। একই সঙ্গে বেঞ্চ ইডিকে বলেছে, 'কারও জীবনের অধিকার থেকে আপনি বঞ্চিত করতে পারেন না।' দেশটির শীর্ষ আদালত আরও বলে, কেজরিওয়াল একজন মুখ্যমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্ট আরও বলেছে, যদি কেজরিওয়ালের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করা হয়, তা হলেও তিনি কোনো সরকারি ফাইলে সই করতে পারবেন না। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
গত ২১ মার্চ দিলিস্নর আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কেজরিওয়াল। তারপর থেকে তিনি জেলে আছেন। তার গ্রেপ্তারকে 'বেআইনি' বলে দাবি করে প্রথমে দিলিস্ন হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কেজরি। কিন্তু দিলিস্ন হাইকোর্টের বিচারপতি স্বর্ণকান্তা শর্মা চলতি মাসের গোড়ায় সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় শীর্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন আপ প্রধান।
গত শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ মন্তব্য করেছিল, 'লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।' আদালত আরও মন্তব্য করেছিল, গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের শুনানির জন্য সময় লাগতে পারে। তাই আদালত অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের কথা ভাবতে পারে। তারপর থেকেই কেজরিওয়ালের জামিন নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার শুনানির সময় দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রীর জামিনের প্রসঙ্গ ওঠে। কেজরিওয়ালের হয়ে আদালতে সওয়াল করছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি বলেন, 'লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া কেজরিওয়ালের গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।' বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ জানায়, তারা দিলিস্নর মুখ্যমন্ত্রীর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের আবেদন শুনবে। কারণ, কেজরিওয়াল একজন জনপ্রতিনিধি। নির্বাচনে জিতেছেন। নির্বাচনে প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে তার।
তবে কেজরিওয়ালের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আদালতে জানায়, ফৌজদারি মামলায় গ্রেপ্তার সবার অধিকার সমান। কেজরিওয়ালকে জামিন দিলে ভুল বার্তা যাবে। তদন্তের স্বার্থে ছয় মাসে তাকে ৯ বার সমন পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি একবারও হাজিরা দেননি। সুপ্রিম কোর্ট বলে, 'দেশে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে, আমরা কখনই তা উপেক্ষা করতে পারি না।'
সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, 'আমরা কাউকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়ার সময় পরীক্ষা করে দেখি তার অপব্যবহার হবে কি না।' তদন্তে 'অসহযোগিতা'র কারণেই কেজরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আদালতে জানায় ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সওয়াল, যদি কেজরিওয়ালকে জামিন দেওয়া হয়, তবে মানুষ ভাববেন তিনি কিছুই করেননি।
বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ বলে, 'যদি কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়, তবে আদালত চায় না তিনি সরকারি কোনো কাজে যুক্ত থাকুন। না হলে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। আমরা সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। নির্বাচন না হলে এই জামিনের বিষয় বিবেচনা করা হতো না।' কেজরিওয়ালের আইনজীবী আদালতে জানান, লেফটেন্যান্ট গভর্নর (উপ-রাজ্যপাল) না বললে কোনো সরকারি কাজ করবেন না তার মক্কেল।