সৌদি আরব যদি ইসরাইলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দেয়, সেক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃস্থানীয় এই দেশটির সঙ্গে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে আমেরিকা স্বাক্ষর করবে না। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান এক সাক্ষাৎকারে এই ইসু্যতে মার্কিন অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তথ্যসূত্র : ফিন্যান্সিয়াল টাইমস
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম 'ফিন্যান্সিয়াল টাইমস'কে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে 'আব্রাহাম অ্যাকর্ডস' চুক্তিতে সৌদির অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে সালিভান বলেন, 'আমেরিকা ও সৌদি আরবের দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার মূল ভিত্তি এবং দর্শন হলো- সমন্বয় বা ঐক্যের ভিত্তিতে সামনে অগ্রসর হওয়া। ইসরাইলের সঙ্গে সৌদির স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক এই দর্শনের একটি অংশ, তেমনি অন্যদিকে ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণও এর আর একটি অংশ। এই দুই অংশই পরস্পরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে সম্পর্কিত। আপনি কোনোটিকেই বাতিল করতে পারবেন না। যদি (বাতিল) করেন, তাহলে সমঝোতার ভিত্তিই আর থাকে না।'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম ২০১৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ মুসলিম আরব রাষ্ট্রগুলোর সামনে 'আব্রাহাম অ্যাকর্ড' নামে একটি বিশেষ চুক্তির প্রস্তাব করেন। এই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশ ইসরাইলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক-বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন করবে, আব্রাহাম অ্যাকর্ডের আওতায় সেসব দেশকে বিশেষ সামরিক ও বাণিজ্যিক সহায়তা দেবে ওয়াশিংটন।
তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের দুই বছরের তৎপরতার পর ২০২০ সালে মিশর, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মরক্কো ইসরাইলকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার পাশাপাশি জায়নবাদী ভূখন্ডটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কও স্থাপন করে। কিন্তু এই চুক্তির যে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য- মধ্যপ্রাচ্যের নেতৃস্থানীয় দেশ সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্থাপন, তা তখন পর্যন্ত অসম্পূর্ণ থেকে গিয়েছিল।
২০২০ সালের নির্বাচনে জয়ের পর ট্রাম্পের উত্তরসূরি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অধরা সেই লক্ষ্য পূরণে মনোযোগী হন। তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা সৌদির সরকারকে প্রস্তাব দেন, দেশটি যদি ইসরাইলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তাহলে পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হবে সৌদি। প্রসঙ্গত, পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দেশগুলোর তালিকায় নিজেদের নাম লেখানো সৌদির সরকারের দীর্ঘদিনের উচ্চাকাঙ্ক্ষা।