গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন

যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে হামাস

তিন ধাপে ভাগ করা হয়েছে নতুন যুদ্ধবিরতিকে যুদ্ধবিরতি না হলে রাফাহতে স্থল অভিযান : ইসরাইল

প্রকাশ | ০৫ মে ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
শুধু গাজা নয়, অধিকৃত পশ্চিম তীরেও সমান তান্ডব চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এই তান্ডবের অংশ হিসেবে শনিবার ইসরাইলি সেনারা দেইর আল-ঘুসান থেকে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে আটক করে নিয়ে যায়। এদিন ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে কয়েকজন নিহতও হন -আল-জাজিরা
ইসরাইলের সঙ্গে নতুন করে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম 'আল-কুদস' শনিবার জানিয়েছে, ইসরাইলের সঙ্গে জিম্মি ও যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকরে রাজি হয়েছেন হামাসের নেতারা। সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম 'আশফাক'ও জানিয়েছে, জিম্মি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে দুই পক্ষ। হামাসের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দুই পক্ষ চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। তথ্যসূত্র : টাইমস অব ইসরাইল, আল-জাজিরা, রয়টার্স নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামাসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের প্রত্যাহার করা ছাড়াই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে রাজি হয়েছেন তারা। এই কর্মকর্তা আরও জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে শুধুমাত্র নারী, বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থদের ছাড়া হবে। তাদের ছাড়ার পরও বেশ কয়েকজন ইসরাইলি সেনা তাদের কাছে থেকে যাবে। এই বিষয়টি কাজে লাগিয়ে যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপে সুবিধা আদায় করে নেবেন তারা। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম 'চ্যানেল-১২' জানিয়েছে, আমেরিকা হামাসকে নিশ্চয়তা দিয়েছে, জিম্মি ও যুদ্ধবিরতির তৃতীয় ধাপ শেষে গাজা থেকে সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে অপর ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম 'কান নিউজ' জানিয়েছে, আরব সংবাদমাধ্যমগুলোতে যুদ্ধবিরতি এবং সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার ব্যাপারে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে, এ ব্যাপারে কোনো কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন ইসরাইলি কর্মকর্তারা। বর্তমানে যে জিম্মি ও যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে, সেটিকে তিনটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। চুক্তিতে বলা আছে, প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হবে ৪০ দিন। এই সময়ে হামাস ৩৩ ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দেবে এবং ইসরাইল কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে। দ্বিতীয় ধাপের মেয়াদ হবে ৪২ দিন। এই ধাপে বাকি জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। একই সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপে গাজায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা হবে। তৃতীয় ধাপেরও মেয়াদ হবে ৪২ দিন। এই সময়টায় হামাস মৃত জিম্মিদের মরদেহ ইসরাইলের কাছে বুঝিয়ে দেবে। 'যুদ্ধবিরতি না হলে রাফাহতে স্থল অভিযান' যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হতে হামাসকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে ইসরাইল। যদি এই সময়ের মধ্যে তারা রাজি না হয়, তাহলে রাফাহতে স্থল অভিযান চালাবে ইসরাইল। যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতার জন্য যখন হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিসরে পৌঁছেছে, তখনই এই হুমকি দিয়েছে ইসরাইল। এই সমঝোতাকে দেখা হচ্ছে 'ডু অর ডাই' বা বাঁচামরার সমঝোতা হিসেবে। মিসর থেকে একটি চুক্তিতে পৌঁছার জন্য বদ্ধপরিকর হামাস। ইসরাইলের দেওয়া যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির প্রস্তাবের লিখিত জবাব মিসরে বৈঠকে দেওয়ার কথা হামাস প্রতিনিধিদের। তারা মিসরে পৌঁছার আগেই শুক্রবার সেখানে উপস্থিত হন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস। উলেস্নখ্য, বারবার হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেছে বিভিন্ন দেশ। তার মধ্যে মিসরও আছে। কিন্তু কোনো প্রচেষ্টাই কাজে আসছিল না। গত মাসে নতুন করে মিসর চেষ্টা শুরু করে। এরই মধ্যে গাজার দক্ষিণে রাফাহতে ইসরাইল ভয়াবহ স্থল অভিযান চালানোর হুঁশিয়ারি দেয়। তাতে উদ্বেগ দেখা দেয় মিসরে। কারণ, মিসরের সিনাই উপত্যকার কাছে অবস্থিত এই রাফাহ শহরে অবস্থান করছেন কমপক্ষে ১৩ লাখ ফিলিস্তিনি। ফলে সেখানে সামরিক অভিযান চালানোর বিরুদ্ধে ইসরাইলকে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্ব নেতারা।