আমেরিকায় বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা অনড়
শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে সরে না যাওয়ায় তাদের বহিষ্কার করছে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইসরাইলি বাহিনীর জন্য সহায়ক সম্পদ বর্জন করবে না
প্রকাশ | ০১ মে ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরাইল-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি এবং ব্যক্তিকে বর্জনের ডাক দিয়ে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। নিউইয়র্কে অবস্থিত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্যাম্প করে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করে আসছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের এই বিক্ষোভ বন্ধে আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে সরে না যাওয়ায় তাদের বহিষ্কার করছে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সোমবারের মধ্যে বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। স্থানীয় সময় দুপুর ২টার মধ্যে শিবির ছেড়ে না গেলে বরখাস্তের মুখে পড়তে হবে বলেও আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। তবে সময়সীমা শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভকারীরা তাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা মাস্ক ও উজ্জ্বল টপস পরিধান করে মানবপ্রাচীর তৈরি করেছেন। যাতে পুলিশ তাদের তাঁবু ভেঙে দিতে না পারে।
এর আগে, বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নেয়নি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে কর্মকর্তাদের আলোচনাও ফলপ্রসূ হয়নি। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মিনুশে শফিক বলেছেন, ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইভি লিগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের জন্য স্থাপন করা তাঁবু শিবির উঠিয়ে নেওয়া নিয়ে নেতাদের কয়েকদিনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর জন্য সহায়ক সম্পদ বর্জন করবে না। তবে গাজায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব রাখছে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের তিনটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ম্যানহাটন ক্যাম্পাসের শিবিরে অবস্থান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এই দাবি তিনটি হচ্ছে- ইসরাইল-সংশ্লিষ্টতা বর্জন, কলাম্বিয়ার অর্থায়নে স্বচ্ছতা এবং বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষমা করা।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আমেরিকার বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। ছয় মাস ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এই হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচু্যত হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে এই অঞ্চলটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
এদিকে, অস্টিনে অবস্থিত টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করায় বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেখানকার কর্মকর্তারা বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা তাঁবু নামানোর নির্দেশনা উপেক্ষা করেছিলেন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কাজ করছেন আইনজীবী জর্জ লব। তিনি স্থানীয় গণমাধ্যম 'কেইউটি নিউজ'কে বলেন, অস্টিন ক্যাম্পাসে সোমবার প্রায় ৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
চলতি মাসে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি ক্যাম্প উচ্ছেদ করার পর থেকে পুরো আমেরিকাজুড়ে একই ধরনের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিউইয়র্কের সর্ব উত্তরের অভিজাত আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়- কলাম্বিয়ার কর্তৃপক্ষের ওপর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কিংবা সরে দাঁড়ানোর চাপ বাড়ছে।
দুই সপ্তাহ আগে, ১৮ এপ্রিল ক্যাম্পাসের কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে নির্মিত একটি ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ১০০ জনের বেশি ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনার পর বিক্ষোভকারীরা আরও দ্বিগুণ উদ্যমে নতুন করে তাঁবু খাটাতে শুরু করেন।