আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে। মে মাসেই সেখান থেকে মানবিক সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। ইসরাইলের চলমান সামরিক অভিযানের কারণে স্থলপথে গাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ পাঠানোর কাজ অত্যন্ত কঠিন। তাই মানবিক সাহায্য পাঠাতে মার্কিন সেনাবাহিনী গাজা উপকূলের কাছে সমুদ্রের ওপর অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শুরু করেছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, এএফপি, ডিডাবিস্নউ নিউজ
আগামী মে মাসেই সেটি প্রস্তুত হয়ে যাওয়ার কথা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মার্চ মাসে এই বন্দর তৈরির কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই উদ্যোগের আওতায় গাজার মাটিতে কোনো মার্কিন সেনা পা রাখবে না। মার্কিন সেনাবাহিনীর তৈরি অস্থায়ী বন্দর গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের জন্য বাস্তবে কত পরিমাণ ত্রাণ পাঠাতে সাহায্য করবে এবং সেই সহায়তা স্থলপথে কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে গাজার উত্তরে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা বেড়ে চলায় জরুরি সহায়তার প্রয়োজনের কথা বলছে একাধিক আন্তর্জাতিক সংগঠন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, অস্থায়ী বন্দরে পাঠানো মানবিক সাহায্য ইসরাইলি চেকপোস্টের অনুমোদনের পর গাজার অভ্যন্তরে পাঠানো যাবে। হামাসের যোদ্ধাদের কাছে যাতে কোনো ধরনের ত্রাণ না পৌঁছায়, ইসরাইল তা নিশ্চিত করতে চায়। জাতিসংঘের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করা হলেও ইসরাইল গোটা প্রক্রিয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চায়।
জাতিসংঘের সূত্র অনুযায়ী, ইসরাইলি চেকপয়েন্টে দীর্ঘ বিলম্বের কারণে গাজায় ত্রাণ পাঠানোর কাজ বর্তমান সংকটের শুরু থেকেই বেশ কঠিন ছিল। এমনকি সাইপ্রাসের ভূখন্ডে ইসরাইলের কর্তৃপক্ষ সেই ত্রাণ সহায়তা পরীক্ষা করার পরও সেই বিলম্ব এড়ানো যাচ্ছে না।
অস্থায়ী বন্দর তৈরির কাজ শেষ হলে প্রথম পর্যায়ে দিনে ৯০টি ট্রাক সেখান থেকে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারবে। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে ১৫০ ট্রাক সেই বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে। ইসরাইলি চেকপোস্টের ওপর ট্রাক চলাচলের গতি অনেকটাই নির্ভর করবে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা সেখানে নিরাপত্তা ও লজিস্টিক্স ব্যবস্থাপনায় সহায়তা করবে। মার্কিন সেনাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কয়েক হাজার সেনার এক বিশেষ ব্রিগেড সক্রিয় রয়েছে। উলেস্নখ্য, নির্মীয়মান অস্থায়ী বন্দরের কাছাকাছি গত বুধবার মর্টার হামলা হয়েছে।
এদিকে, অস্থায়ী বন্দরের মাধ্যমে শেষ পর্যন্ত নির্বিঘ্নে মানবিক সাহায্য পাঠানো সম্ভব হলেও রাফাহতে ইসরাইলি বাহিনীর ঘোষিত অভিযানের কারণে গাজার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ত্রাণ বণ্টনের কাজ আরও বিপজ্জনক ও কঠিন হয়ে উঠতে পারে। প্রবল আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরাইলি বাহিনী সেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় হামাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বদ্ধপরিকর।