আমেরিকার নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ম্যানহাটানের যে আদালতে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের 'হাশ-মানি' মামলার বিচার চলছে, সেই আদালতের বাইরের চত্বরে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন এক ব্যক্তি। শুক্রবার নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় বেলা ১টার পরে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আদালতকক্ষ থেকে চলে আসা রাস্তা ধরে ওই ব্যক্তি হেঁটে পার্কে আসেন। বাতাসে প্রচারপত্র ছুড়ে দিচ্ছিলেন তিনি। এরপর ব্যাকপ্যাক থেকে একটি ক্যান বের করে শরীরে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। তথ্য সূত্র : বিবিসি
নিজ দেহে অগ্নিসংযোগকারী ওই যুবকের নাম ম্যাক্সওয়েল আজারেলেস্না। ফ্লোরিডার বাসিন্দা আজারেলেস্না এক সপ্তাহ আগে নিউ ইয়র্কে এসেছিলেন। নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে তার পূর্ব অপরাধের কোনো রেকর্ড নেই। তবে আজারেলেস্না যে নিউ ইয়র্কে এসেছেন, তা ফ্লোরিডায় বসবাসরত তার পরিবারের সদস্যরা জানতেন না।
মার্কিন পর্নো অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলের সঙ্গে একসময় ঘনিষ্টতা ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরুর সময় এই ইসু্যতে মুখ বন্ধ রাখতে স্টর্মি ড্যানিয়েলকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ প্রদান করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাটিই পরিচিতি পেয়েছে 'হাশ-মানি' মামলা হিসেবে।
শুক্রবার দুপুরে ম্যানহাটানের ওই আদালতে যখন হাশ-মানি মামলার শুনানি চলছিল, সে সময় এজলাসে উপস্থিত ছিলেন ট্রাম্প। ওই ঘটনা ঘটার পর শুনানি স্থগিত করা হয়, ট্রাম্পও আদালত ত্যাগ করেন। তবে আজারেলেস্নার এই ঘটনায় আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ঝামেলা সৃষ্টি হয়নি। কয়েক ঘণ্টা স্থগিত থাকার পর বিকেলের দিকে ফের মামলার শুনানি কার্যক্রম শুরু করেন আদালত।
প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক পুলিশের প্রধান জেফ্রি ম্যাডরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে একটি ব্যাগ এবং রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডামূলক পুস্তিকা-পস্ন্যাকার্ড নিয়ে আদালত এবং সংলগ্ন পার্ক এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন ম্যাক্সওয়েল আজারেলেস্না। তারপর দুপুর ১টার দিকে আদালত চত্বরের বাইরে ব্যাগ থেকে তরল দাহ্য পদার্থের বোতল বের করে নিজ গায়ে ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। ম্যাডরে জানান, ট্রাম্পের বিচার চলার কারণে আদালতে যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ছিল। কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যে অগ্নিনির্বাপক দিয়ে আগুন নিভিয়ে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়। পরে ম্যানহাটানের একটি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
তার ব্যাগ থেকে তরল দাহ্য পদার্থ এবং কিছু পুস্তিকা-প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব পুস্তিকার সবই ষড়যন্ত্রতত্ত্ব নির্ভর এবং রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডামূলক এসব পুস্তিকা-প্রচারপত্রে মূল বক্তব্য- ট্রাম্প ও বাইডেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ এবং তারা আমেরিকায় ফ্যাসিস্ট শাসন কায়েম করেছেন।