রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
ইসরাইলে ইরানের হামলা

সুর চড়াচ্ছে ইরান ও ইসরাইল

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ 'ডেড সি' থেকে উদ্ধার করে ইসরাইলি বাহিনী

আপাতত পরিস্থিতি 'স্বাভাবিক' থাকলেও একে-অপরের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে ইরান ও ইসরাইল। সোমবার ইসরাইলের সেনাপ্রধান সাফ জানিয়ে দেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলেই ইরানের হামলার কড়া জবাব দেওয়া হবে। অন্যদিকে, ইরানের হুঁশিয়ারি, ইসরাইল হামলা চালালে এমন অস্ত্র কাজে লাগানো হবে, যা আগে কোনোদিনও ব্যবহার করা হয়নি। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি

হামলার জবাব দেওয়া নিয়ে চাপে নেতানিয়াহু

গত শনিবার রাতে প্রথমবারের মতো ইসরাইলি ভূখন্ডে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান। তেল আবিব কীভাবে তার জবাব দেবে, সেই প্রশ্ন এখন সবার মনে। ইসরাইলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এখন পর্যন্ত তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে কোনো ধরনের ইঙ্গিত দেয়নি। এদিকে, আমেরিকাসহ মিত্র দেশগুলো চাইছে, এক্ষেত্রে ইসরাইল সংযম প্রদর্শন করুক। নতুবা পুরো মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে।

চিরশত্রম্নর হামলার শিকার হওয়ার পরও বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি কথা বলছেন না ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। যেটা তার স্বভাব-বিরুদ্ধ। এখন পর্যন্ত ইরানের হামলার বিরুদ্ধে তার দেশ কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখাতে চলেছে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

এদিকে, দেশের ভেতর বেশ কয়েকজন রাজনীতিক নেতানিয়াহুর প্রতি ইরানের হামলার কঠোর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার রাতেই জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী আইটামার বেন গাভির কঠোর পাল্টা জবাবের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ এক পোস্টে তিনি লেখেন, 'এখন পর্যন্ত প্রশংসনীয় প্রতিরক্ষা- এখন অবশ্যই একটি গুঁড়িয়ে ফেলার মতো পাল্টা জবাব চাই। তাড়াহুড়ার প্রয়োজন নেই।'

শনিবার রাতের ওই হামলার পর সোমবার পর্যন্ত নেতানিয়াহু তার যুদ্ধ মন্ত্রিসভার সঙ্গে দুইবার বৈঠক করেছেন। ফোনে কথা বলেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। কিন্তু রোববারের পর তিনি এ বিষয়টি নিয়ে জনসম্মুখে আর কোনো কথা বলেননি। শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম 'এক্স'-এ একটি ছোট পোস্টে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রশংসা করেছেন।

নেতানিয়াহু কিছু না বললেও ইসরাইলের সেনাপ্রধান হারজি হালেভি সোমবার সেনাবাহিনীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ইরানের হামলার 'জবাব দেওয়া হবে'। তবে কখন বা জবাব কেমন হবে, সে বিষয়ে কিছু বলেননি।

ইরানি পরমাণু স্থাপনায় হামলার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ

এদিকে, জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ প্রধান আশঙ্কা করছেন, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করতে পারে ইসরাইল। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সোমবার বলেন, ইসরাইল সম্ভবত ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এবং এ বিষয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। এই পরিস্থিতিতে তিনি 'সর্বোচ্চ সংযম' দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) ইরানের স্থাপনাগুলোতে পরিদর্শনের কাজ মঙ্গলবার আবারও শুরু হবে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ইরানের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরাইলি হামলার সম্ভাবনা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন কি-না। জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা সর্বদা এমন হামলার সম্ভাবনা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি আপনাদের যা বলতে পারি, তা হলো- ইরানে অবস্থানকারী আমাদের পরিদর্শকদের দেশটির সরকার জানিয়েছে, আমরা প্রতিদিন যেসব পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন করছি।' এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'আমি পরিস্থিতি সম্পূর্ণ শান্ত না হওয়া পর্যন্ত পরিদর্শকদের ফিরে যেতে দেব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'

প্রসঙ্গত, আইএইএ নিয়মিত ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পরিদর্শন করে থাকে। ইরান বলছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, কিন্তু পশ্চিমা শক্তিগুলো তেহরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টার অভিযোগ এনেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে