শক্তি হারাচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা :থাই প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেত্থা থাভিসিন
সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে লাগাতার লড়াইয়ের জেরে এরই মধ্যে যথেষ্ট শক্তি হারিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা। তবে এখনো উচ্ছেদ হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছায়নি এই সরকার। সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেত্থা থাভিসিন বলেন, 'মিয়ানমারের বর্তমান সরকারে এরই মধ্যে বেশ খানিকটা শক্তি হারিয়েছে। তবে এখনো তারা ক্ষমতায় রয়েছে এবং খুব শিগগিরই তাদের উচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা নেই।' তথ্যসূত্র : রয়টার্স থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেত্থা বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আমরা আঞ্চলিক রাজনীতিতে মিয়ানমারের তৎপরতা প্রত্যাশা করছি। আশা করছি এবার আমরা মিয়ানমারে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব। আমার রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বলছে, এখনই চুক্তিতে পৌঁছানোর আদর্শ সময়।' থাইল্যান্ড মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ। দুটি দেশই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশের আঞ্চলিক জোট 'আসিয়ান'র সদস্য। ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি অভু্যত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি'র নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকারকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং এই অভুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দখলের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি। অভু্যত্থানের সময়েই বন্দি করা হয়েছিল অং সান সু চি, তার নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী-এমপি এবং তার রাজনৈতিক দল 'ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি'র (এনএলডি) হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে। সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি জনগণ প্রথম দিকে ব্যাপক আকারে বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করেছিলেন, কিন্তু প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে সেসব বিক্ষোভ দমন করেছে সামরিক সরকার। তবে তারপর থেকে গণতন্ত্রপন্থি জনগণের একটি অংশ যোগ দিতে শুরু করে সামরিক বাহিনী বিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে। গত বছর অক্টোবর থেকে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী একযোগে হামলা শুরু করে সামরিক বাহিনীর ওপর। এখনো সেই সংঘাত চলছে এবং এরই মধ্যে দেশটির প্রায় ১০ শতাংশ ভূখন্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই সংঘাতের শেষ পরিণতি হবে মিয়ানমারের টুকরা টুকরা হওয়ার মধ্যে দিয়ে। গত মাসে মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি সেমিনারের আয়োজন করেছিল থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। সেই সেমিনার জান্তা বিরোধী জোট 'দ্য ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট'র (নাগ) প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছেন। এ ঘটনায় থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছে জান্তা। সংবাদ সম্মেলনে থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মিয়ানমার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। থাইল্যান্ড সবসময় মিয়ানমারকে ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নয়নের পথে অগ্রসর হতে দেখতে চায়।'