গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে গাজা উপত্যকায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন মোট ১৯৬ ত্রাণকর্মী। এই ত্রাণকর্মীদের নিহত হওয়ার ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
গত ১ এপ্রিল গাজার দেইর আল-বালাহতে আমেরিকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক খাদ্য সহায়তা সংস্থা 'ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের' (ডাবিস্নউসিকে) গাড়িতে হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এতে নিহত হন সাত ত্রাণকর্মী। এই ত্রাণকর্মীদের মধ্যে একজন অস্ট্রেলিয়া, তিনজন যুক্তরাজ্য, একজন আমেরিকা, একজন পোল্যান্ড এবং একজন ফিলিস্তিনের নাগরিক। ইসরাইল প্রথমে এই ঘটনার দায় এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে আমেরিকার চাপে নতি স্বীকারে বাধ্য হয়, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় এবং দুইজন সেনা কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করে।
শুক্রবার ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী এ সংক্রান্ত বিবৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, 'ইসরাইলের সরকার তাদের ভুল স্বীকার করেছে। এটা ইতিবাচক, তবে কে ভুল করেছে- তা মূল ব্যাপার নয়। মূল ব্যাপারটি হলো (ইসরাইলি বাহিনীর) রণকৌশল এবং পদ্ধতি, যে কারণে এ ধরনের ঘটনা গাজায় প্রতিদিন বারবার ঘটছে।' তিনি বলেন, গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ১৯৬ জন ত্রাণকর্মী। আমরা প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চাই। আমরা জানতে চাই, কেন তাদের হত্যা করা হয়েছে।'
গত ৭ অক্টোবর গাজার ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরাইলের ভূখন্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় এক হাজার হামাস যোদ্ধা। তারপর সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যা করে এক হাজার ২০০ জন মানুষকে, পাশপাশি জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে। অভূতপূর্ব সেই হামলার পর সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। সেই অভিযানে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৫ হাজার। সেই সঙ্গে ইসরাইলি বাহিনীর বোমায় বাস্তুচু্যত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে গত কয়েক মাস ধরে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের আগ পর্যন্ত এই যুদ্ধ থামবে না।
এদিকে, গাজা উপত্যকায় অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সেখানে ত্রাণ সরবরাহেও বাধা দিচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। ফলে উপত্যকায় বসবাসরত ২২ লাখ ফিলিস্তিনি ভয়াবহ খাদ্য সংকটের মধ্যে পড়েছেন। খাবারের অভাবে মানুষের মৃতু্যও শুরু হয়েছে সেখানে।