আজকের যায়যায়দিন

ডা. ফজিয়া আলভি দক্ষিণ গাজার বিধ্বস্ত ইউরোপীয় পাবলিক হাসপাতালে তার শেষ দিনে যখন নিবিড়পরিচর্যা ইউনিটে রাউন্ড দিচ্ছিলেন, তখন তিনি মুখে আঘাত পাওয়া এবং অক্সিজেনের নল লাগানো দুই শিশুর পাশে দাঁড়ান। তিনি বলেন, 'আমি নার্সকে জিজ্ঞেস করলাম, এদের আঘাতের ইতিহাস কী? তিনি জানান, তাদের কয়েক ঘণ্টা আগে আনা হয়েছিল। তাদের মস্তিষ্কে স্নাইপারের গুলি বিদ্ধ হয়েছিল। তারা সাত বা আট বছর বয়সি ছিল।' তথ্যসূত্র : গার্ডিয়ান

নার্সের এই কথা শোনার পর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন কানাডিয়ান চিকিৎসক ফজিয়া। কারণ ইসরাইলি সেনাদের গুলির আঘাত পাওয়া শিশুদের চিকিৎসা এটাই তার প্রথম ছিল না। তিনি জানতেন, একটি উচ্চ-ক্যালিবার বুলেট একটি শিশুর শরীরের কতটুকু ক্ষতি করতে পারে।

ডা. ফজিয়া বলেন, এই শিশুরা 'কথা বলতে পারছিল না, প্যারাপেস্নজিক। তারা আক্ষরিক অর্থেই সেই বিছানাগুলোয় নিথর হয়ে শুয়ে ছিল। শুধু তারাই ছিল না। আমি এমনকি ছোট বাচ্চাদেরও দেখেছি, যাদের মাথায় ও বুকে সরাসরি স্নাইপারের গুলি লেগেছে। তারা যোদ্ধা ছিল না, তারা ছিল ছোট্ট শিশু।'

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহত হয়েছে ৩২ হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে প্রতি তিনজনের একজন শিশু। নিহত ছাড়াও আরও কয়েক হাজার যুবক অঙ্গবিচ্ছেদসহ গুরুতর জখম হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন / বিমান হামলায় শেষ ৭২ ফিলিস্তিনির জীবন

৯ জন ডাক্তার চলতি বছর গাজার হাসপাতালে কাজ করার বিষয়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। এদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই বিদেশি। তাদের সাধারণ মূল্যায়ন ছিল, বেশিরভাগ মৃত এবং আহত শিশু আবাসিক এলাকাগুলোতে ইসরাইলের ব্যাপক বোমাবর্ষণের সময় আঘাত পেয়েছিল বা অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। অন্যরা ভবন ধসে নিহত বা আহত হয়েছে।

তবে চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, অনেক শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি মাথা বা বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এরা যোদ্ধা ছিল না। বিবরণ শুনে তাদের মনে হয়েছে, এসব হতাহতদের সরাসরি টার্গেট করেছিল ইসরাইলি বাহিনী।

গত ফেব্রম্নয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি দল ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বেসামরিক ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ এনেছিল। এদের মধ্যে অনেকেই শিশু ছিল যারা আশ্রয় নিয়েছিল শিবিরে।