গাজায় আগ্রাসন
ইসরাইলি হামলায় ৫ ত্রাণকর্মী নিহত
নিহতদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান, পোলিশ যুক্তরাজ্য ও ফিলিস্তিনি সহায়তা কর্মী রয়েছেন বিশ্বে ত্রাণকর্মীদের জন্য গাজা এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান
প্রকাশ | ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বিমান হামলায় 'ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন'র (ডাবিস্নউসিকে) সাতজন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে দেশটির মধ্য গাজায় ত্রাণ বিতরণের পর ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হন তারা। গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান, পোলিশ, যুক্তরাজ্য ও ফিলিস্তিনি সহায়তা কর্মী রয়েছেন। এদিকে 'ঘটনার সব পরিস্থিতি বোঝার জন্য' তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স
এর আগে ফিলিস্তিন ভূখন্ডে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় শত শত চিকিৎসক ও ত্রাণকর্মীকে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী। এরপর অবরুদ্ধ এই অঞ্চলে সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করা সত্ত্বেও গাজায় মানবিক সহায়তা দেওয়ার সময় হত্যা করা হয় ওই সাত সাহায্যকর্মীকে। অন্যদিকে, গাজায় 'নির্বিচার হত্যা' বন্ধ করার জন্য ইসরাইলি বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের প্রতিষ্ঠাতা জোসে আন্দ্রেস। বেশ কয়েকজন সাহায্যকর্মী হত্যার পর এই আহ্বান জানান তিনি। উলেস্নখ্য, ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন হলো আমেরিকাভিত্তিক একটি সহযোগিতা সংস্থা।
ইসরাইলের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে পোল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া
ইসরাইলের কাছে গাজায় এক পোলিশ ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে পোল্যান্ড। মঙ্গলবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানী ওয়ারশতে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূতের কাছে 'জরুরি ব্যাখ্যা' চেয়েছেন।
সামজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্সে' পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্স্না সিকোরস্কি লিখেছেন, 'আমি ব্যক্তিগতভাবে ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত ইয়াকভলিভনেকের কাছে জরুরি ব্যাখ্যা চেয়েছি।' একইভাবে অস্ট্রেলিয়াও ইসরাইলের কাছে এই হত্যাকান্ডের ব্যাখ্যা চেয়েছে।
বিশ্বে ত্রাণকর্মীদের জন্য গাজা এখন
সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান
বিশ্বে মানবিক ত্রাণকর্মীদের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান হয়ে উঠেছে গাজা। ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের ছয় মাসে ত্রাণকর্মীদের এই মৃতু্যই প্রথম নয়। এর আগেও যুদ্ধের শুরু থেকে অন্তত ১৯৬ জন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন বলে পরিসংখ্যান দিয়েছে 'এইড ওয়ার্কার সিকিউরিটি ডাটাবেজ' (এডাবিস্নউএসডি)।
মানবিক ত্রাণকর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার বড় বড় সব ঘটনার রেকর্ড রাখে এডাবিস্নউএসডি। তাদের তথ্যমতে, গত বছর ১৬১ জন ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছিল। ত্রাণকর্মীদের জন্য এ যাবৎকালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বছর ছিল সেটি।
গাজায় সবচেয়ে বেশি ত্রাণ কাজ পরিচালনা করে জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএসআরডাবিস্নউএ)। যুদ্ধের মধ্যে এই সংস্থার কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন।
সোমবার গাজার মধ্যাংশের দেইর আল-বালাহ এলাকায় ইসরাইলের বিমান হামলায় নিহতের ঘটনার পর নরওয়ের শরণার্থী কাউন্সিল এবং জাতিসংঘের সাবেক মানবিক ত্রাণ বিষয়ক প্রধান জেন এগল্যান্ড বলেছেন, 'আর কোথাও এত ত্রাণকর্মী মারা যায়নি। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি হতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে।'
হামলার ঘটনার পর ত্রাণকাজ করা গোষ্ঠীগুলোও উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, তারা যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন তাদের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশি চিন্তিত। ইউএনআরডাবিস্নউএ এক প্রতিবেদনে বলেছে, তাদের ১৭৩ জন স্টাফ সদস্য কাজে নিয়োজিত থাকার সময় নিহত হয়েছে। আরও ৩৫৩টি হামলার ঘটনায় ইউএনআরডাবিস্নউএ'র বিভিন্ন ভবন এবং এর ভেতরের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া, আরও ৫২টি ঘটনায় ইউএনআরডাবিস্নউএ'র ভবন সামরিক কাজে ব্যবহার হয়েছে কিংবা সেগুলোতে হস্তক্ষেপ হয়েছে।