ফিলিস্তিনের গাজার উত্তরাঞ্চলের কিছু এলাকায় এখন 'খুব সম্ভবত' দুর্ভিক্ষ চলছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তিনি জানান, ইসরাইলি অবরোধের কারণে ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে পারছে না। ফলে গাজায় ফিলিস্তিনের আরও সাহায্য পাওয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
আমেরিকা আগেই গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘনিয়ে আসছে বলে সতর্ক করেছিল। গাজায় ত্রাণ প্রবেশ ও বিতরণে বাধা নিয়ে অভিযোগ করেছিল এবং দুর্ভিক্ষ আসন্ন এমন কথাও বলেছিল। কিন্তু শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, দুর্ভিক্ষ সম্ভবত এরই মধ্যেই চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, 'আমরা যেমন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় দুর্ভিক্ষের চরম ঝুঁকি রয়েছে। তবে দুর্ভিক্ষ চলছে না। কিন্তু উত্তর গাজায় এর ঝুঁকি ও উপস্থিতি উভয়ই রয়েছে। অন্তত কিছু অঞ্চলে খুব সম্ভবত দুর্ভিক্ষ রয়েছে।'
চলতি মাসের শুরুর দিকে জাতিসংঘ-ভিত্তিক খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়ে জানিয়েছিল, গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন। উত্তর গাজায় মে মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে এবং জুলাইয়ের মধ্যে গোটা গাজাজুড়ে তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক গাজায় ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে মারাত্মক চ্যালেঞ্জের কথা জানিয়েছেন। নিরাপত্তা ও ইসরাইলের কাছ থেকে সহযোগিতার অভাবের কথা বলেছেন তিনি।
যদিও ইসরাইল উল্টো বলছে, তারা গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাড়িয়েছে এবং ত্রাণ বিতরণে দেরির জন্য তারা দায়ী নয়। এ বিষয়টি জাতিসংঘ এবং মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর দায়িত্ব বলে তারা উলেস্নখ করেছে এবং হামাস ত্রাণ চুরি করছে বলেও অভিযোগ করেছেন ইসরাইলের কর্মকর্তারা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ভূখন্ডে হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। তারপর থেকে তাদের বিরতিহীন হামলায় ঘনবসতিপূর্ণ ছোট্ট এই ছিটমহলটিতে ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরাইলি হামলায় মোট ৭১ জন নিহত হয়েছেন। গাজার দক্ষিণাংশে মিসরের সীমান্তবর্তী শহর রাফাহর একটি বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরাইলি বিমান হামলায় ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার অর্ধেকের বেশি ঘরবাড়ি হারিয়ে এই রাফাহ নগরীতে আশ্রয় নিয়ে আছেন। কিন্তু সেখানেও অবিরাম বোমা হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল।