ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ
ন্যাটোর কোনো দেশ আক্রমণের পরিকল্পনা নেই : পুতিন
তবে পশ্চিমা দেশগুলো এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠালে তা গুলি করে ভূপাতিত করা হবে
প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ন্যাটোর কোনো দেশে হামলা নিয়ে রাশিয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই এবং তারা পোল্যান্ড, বাল্টিক দেশগুলো বা চেক রিপাবলিকে আক্রমণ করবে না বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। তবে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান পাঠালে রুশ বাহিনীগুলো তা গুলি করে ভূপাতিত করবে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। বুধবার রাশিয়ার স্থানীয় সময় রাতে দেশটির বিমান বাহিনীর পাইলটদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে পুতিন এসব কথা বলেন; বৃহস্পতিবার ক্রেমলিন প্রকাশিত ভাষণের অনুলিপি থেকে এমনটি জানা গেছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স
ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকার কাছে আধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চেয়ে আসছে। এমনকি এই ফাইটার দেওয়ার আগে অত্যাধুনিক এই যুদ্ধবিমান চালনার প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে ইউক্রেনীয় পাইলটদের। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, পশ্চিমারা ইউক্রেনকে এই যুদ্ধবিমান দিলেও তা এই যুদ্ধে কোনো কাজে আসবে না, যদিও এই বিমান পারমাণবিক অস্ত্র বহন করতে পারে।
পুতিন বলেন, ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো পূর্বে রাশিয়ার দিকে সম্প্রসারিত হয়েছে, কিন্তু কোনো ন্যাটো দেশে আক্রমণ চালানোর কোনো পরিকল্পনা মস্কোর নেই। তিনি বলেন, 'এসব রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের কোনো আক্রমণাত্মক অভিপ্রায় নেই। আমরা আরও কিছু দেশে আক্রমণ করতে পারি, এমন ধারণায় পোল্যান্ড, বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোর বাসিন্দারা ও চেকরাও ভয়ে আছে, কিন্তু এসব সম্পূর্ণ বাজে কথা, অর্থহীন প্রলাপ।'
ইউক্রেনকে অস্ত্র, অর্থ ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে আমেরিকা রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করছে বলে অভিযোগ ক্রেমলিনের। তারা বলছে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক সম্ভবত কখনোই এত খারাপ ছিল না।
পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে আমেরিকার নির্মিত এফ-১৬ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, এসব বিমান ইউক্রেনের পরিস্থিতি পাল্টাতে পারবে না।
পুতিন বলেন, 'যদি তারা এফ-১৬ সরবরাহ করে আর তারা এ নিয়ে কথা বলছে, সম্ভবত পাইলটদেরও প্রশিক্ষণ দেবে; এগুলোতে যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতি পাল্টাবে না। আজ যেমন আমরা ট্যাংক, সাঁজোয়া যান ও মাল্টিপল রকেট লঞ্চারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ধ্বংস করছি, তেমনি এসব আকাশ যানও ধ্বংস করব।' তিনি বলেন, 'তৃতীয় কোনো দেশের বিমানক্ষেত্র থেকে যদি এগুলোকে ব্যবহার করা হয়, তাহলে অবশ্যই তারা আমাদের বৈধ লক্ষ্য হয়ে উঠবে, সেগুলো যেখানেই হোক না কেন।'
গত বুধবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের চালান ইউক্রেনে পৌঁছতে পারে। তার এই বক্তব্যেরই প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন পুতিন।
ইউক্রেন দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়ার সঙ্গে সর্বাত্মক এক যুদ্ধে লড়াই করছে। দেশটি অনেক দিন ধরেই পশ্চিমা দাতাদের কাছে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চেয়ে আসছে। বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডস দেশটিকে এফ-১৬ দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে আর ন্যাটো জোটের অনেকগুলো দেশ ইউক্রেনীয় পাইলটদের এসব যুদ্ধবিমান ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেবে বলে জানিয়েছে।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। ফলে ১৯৬২ সালের কিউবা মিসাইল সংকটের পর থেকে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সংকট সবচেয়ে গভীর পর্যায়ে রয়েছে।