গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন
ট্যাংক দিয়ে পিষে দিল বহু মৃতদেহ
উত্তর গাজায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে ইসরাইল ১০ বছর আগে নিহত দুই সেনার মরদেহ ফেরত চায় ইসরাইল
প্রকাশ | ২৬ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আল-শিফা হাসপাতালের চলমান ইসরাইলি অবরোধ থেকে পালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিরা বর্ণনা করেছেন, ইসরাইলের ট্যাংক ও সাঁজোয়া বুলডোজার দিয়ে অনেক মৃতদেহ পিষে ফেলেছে। জামিল আল-আয়ুবি (যিনি হাসপাতালে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একজন) ইসরাইলি ট্যাংক এবং সাঁজোয়া বুলডোজার হাসপাতালের আঙিনায় অন্তত চারটি লাশের ওপর দিয়ে চলতে দেখেছেন। অ্যাম্বুলেন্সগুলোও বিধ্বস্ত হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা হাসপাতালের ভয়ংকর দৃশ্য শেয়ার করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ইসরাইলি সেনারা আটজনের একটি দলকে হত্যা করছে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স, এএফপি
খান ইউনিসের কাছে ইউরোপীয় গাজা হাসপাতালে কর্মরত একজন অর্থোপেডিক সার্জন হুসাম বাশির বলেন, অবরুদ্ধ ছিটমহলে চিকিৎসা সহায়তা প্রবেশে ইসরাইলি বিধিনিষেধের কারণে নূ্যনতম সরঞ্জাম দিয়ে এটি পরিচালনা করা হচ্ছে।
উত্তর গাজায় ত্রাণ সরবরাহে বাধা দিচ্ছে ইসরাইল
এদিকে, ইসরাইেল উত্তর গাজায় ত্রাণ বিতরণ করতে বাধা দিয়েছে বলে রোববার জানিয়েছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডাবিস্নউএ)। গাজার এই অঞ্চলে দুর্ভিক্ষের হুমকি সবচেয়ে বেশি বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
জাতিসংঘের এই সংস্থাটির প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সোস্যাল মিডিয়া পস্ন্যাটফর্ম 'এক্সে' বলেছেন, 'আমাদের চোখের সামনে বিপর্যয়কর অবস্থা উদ্ঘাটিত হওয়া সত্ত্বেও ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘকে জানিয়েছে, তারা উত্তরে আর কোনো ইউএনআরডাবিস্নউএ-এর খাদ্যবাহী কনভয় প্রবেশ করার অনুমোদন দেবে না।' তিনি আরও বলেন, 'এ ধরনের পদক্ষেপ আপত্তিজনক এবং একই সঙ্গে এটি মানব-সৃষ্ট দুর্ভিক্ষের সময় জীবন রক্ষাকারী সহায়তা সরবরাহে বাধা দেওয়ার ইচ্ছাকেই সামনে তুলে ধরছে।'
প্রায় ছয় মাস আগে শুরু হওয়া গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের ফলে অবরুদ্ধ এই ভূখন্ডটির মানুষ ভয়ানক মানবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। গত সপ্তাহে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি খাদ্য নিরাপত্তা মূল্যায়নে সতর্ক করে বলা হয়েছে, জরুরিভাবে হস্তক্ষেপ না করা হলে আগামী মে মাসের মধ্যে গাজার উত্তরে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে।
আর ইউএনআরডাবিস্নউর যোগাযোগের পরিচালক জুলিয়েট তোমা বলছেন, গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ইউএনআরডাবিস্নউএ গাজার উত্তরে খাদ্য সরবরাহ করতে পারেনি। তিনি বলছেন, 'সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হলো কফিনে আরেকটি পেরেক'।
১০ বছর আগে নিহত দুই সেনার মরদেহ ফেরত চায় ইসরাইল
কাতারের রাজধানী দোহায় দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। তবে এ আলোচনা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে হামাসের একটি সূত্র। কারণ ইসরাইল আলোচনায় নতুন কিছু দাবি যুক্ত করেছে।
এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো, তারা গাজায় ১০ বছর আগে নিহত হওয়া দুই সেনার মরদেহ ফেরত চেয়েছে। ২০১৪ সালে গাজায় আগ্রাসন চালাতে গিয়ে নিহত হয় ওরন শল এবং হাদার গোল্ডিন নামে দুই সেনা। তাদের মরদেহ এখন পর্যন্ত ফেরত দেয়নি হামাস।
অপরদিকে, হামাস জানিয়েছে, যতক্ষণ ইসরাইল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে না ততক্ষণ কোনো চুক্তিতে রাজি হবে না তারা। যদিও ইসরাইল হামাসের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
হামাসের ওই সূত্রটি সৌদির সংবাদমাধ্যম 'আল-আরাবি আল-জাদিদ'কে বলেছেন, 'আলোচনার টেবিল উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। হামাসের অবস্থান দৃঢ়, আমরা ইসরাইলের কাছে আত্মসমর্পণ করব না যেটির জন্য তারা চাপ দিচ্ছে।'