কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ ছিনতাই করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং দলের সভাপতি মলিস্নকার্জুন খাড়্গে। এ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছেন তারা। তথ্যসূত্র : এবিপি নিউজ
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সোনিয়া গান্ধী বৃহস্পতিবার বলেন, লোকসভার ভোটের আগে পরিকল্পিতভাবে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই ঘটনা শুধু কংগ্রেসের ওপর নয়, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ওপরেও জঘন্য আঘাত। রাহুল গান্ধী বলেন, 'দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ আসলে মোদি এবং অমিত শাহের অপরাধমূলক গতিবিধি।' অন্যদিকে বিচার বিভাগ, আয়কর দপ্তরসহ সাংবিধানিক সংস্থাগুলোর কাছে খাড়্গের আবেদন- 'সত্যি যদি দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চান, তাহলে আমাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার অনুমতি দিন।'
২০১৮-১৯ মূল্যায়ন বর্ষের আয়কর সংক্রান্ত অনিয়মের জন্য ১০৫ কোটি রুপি জরিমানার বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় হস্তক্ষেপ চেয়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দিলিস্ন হাইকোর্টে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু বিচারপতি যশবন্ত বর্মার বেঞ্চ সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের কোনো উপযুক্ত কারণ দেখছেন না আদালত।
অভিযোগের পরে আয়কর দপ্তর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অ্যাকাউন্টে লেনদেন। এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সোনিয়া গান্ধী বলেন, কংগ্রেসকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করার চেষ্টা চালাচ্ছেন মোদি। তবে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এই পরিকল্পিত পদক্ষেপ সত্ত্বেও তারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই থেকে সরে আসবেন না বলে জানান তিনি।
আয়কর দপ্তর সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ মূল্যায়ন বর্ষের আয়কর সংক্রান্ত অনিয়মের জন্য ১০৫ কোটি রুপি জরিমানা এবং ৩০ কোটির সুদ, অর্থাৎ মোট ১৩৫ কোটি কংগ্রেসের কাছে তাদের প্রাপ্য। রাহুলের দলের পাল্টা দাবি, যুব কংগ্রেসসহ শাখা সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে আয়কর রিটার্ন সংক্রান্ত অতি সামান্য অনিয়মের অভিযোগে (নগদ ১৪ লাখ ৪০ হাজার রুপি ওই অ্যাকাউন্টে জমা পড়া এবং রিটার্ন জমা দিতে ৪৫ দিন দেরি হওয়ার অভিযোগ) জরিমানা ধার্য করেছিল আয়কর দপ্তর। যা স্পষ্টতই 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা'।
কংগ্রেসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোর বিরুদ্ধে আয়কর বিভাগের পদক্ষেপের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে যে আবেদন জানানো হয়েছিল, গত ৮ মার্চ আপিল ট্রাইবু্যনাল তা খারিজ করে দেয়। কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, তারপরই আয়কর দপ্তর নিয়ম-বহির্ভূতভাবে তাদের ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে জরিমানা হিসেবে ১০৫ কোটি টাকা কেটেছে। এর পরে দিলিস্ন হাইকোর্ট স্থগিতাদেশের আবেদন খারিজ করার পর ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে লেনদেন কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।