শক্তিশালী ভ্যাকুয়াম বোমা হামলা চালিয়ে ইউক্রেনের তিন শতাধিক সেনাকে হত্যার দাবি করেছে রাশিয়া। আশপাশে থাকা অক্সিজেন শুষে নিয়ে ভয়াবহ প্রাণঘাতী এই বোমা বিস্ফোরিত হয়ে থাকে। শনিবার রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান কর্নেল জেনারেল অ্যালেক্সি কিম প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগুর সঙ্গে বৈঠকে তিন শতাধিক ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যার তথ্য জানান। তবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তার এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তথ্যসূত্র : সিএনএন, এএফপি, রয়টার্স
রুশ সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান কর্নেল জেনারেল অ্যালেক্সি কিম স্পষ্ট করে জানাননি, ঠিক কোথায় হামলাটি চালানো হয়েছে। তিনি শুধু বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার একটি ডেপলয়মেন্ট পয়েন্ট লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
রুশ বার্তা সংস্থা 'আরআইএ নভোস্তি' শনিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, হামলায় 'ভোলোমেট্রিক ডেটোনেশন বোমা' ব্যবহার করার কথা জানিয়েছেন জেনারেল কিম, যা 'ভ্যাকুয়াম বোমা' নামে পরিচিত। এই বোমাটি এতটাই শক্তিশালী যে, এটির আঘাতে ভবন ধসে পড়ে ও মানুষের অঙ্গপ্রতঙ্গ উড়ে যায়। দেওয়াল বা সুড়ঙ্গও এই বোমা থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে না।
ঠিক কবে এই বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেটির তারিখও উলেস্নখ করা হয়নি। তবে জেনারেল কিম জানিয়েছেন, শুধুমাত্র গত সপ্তাহে কার্যকর নজরদারি কার্যক্রম এবং হামলা ব্যবস্থার মাধ্যমে ইউক্রেনের সেনাদের ব্যবহৃত তিনটি আমেরিকান প্যাট্রিয়ট কমপেস্নক্সেস, একটি ভ্যাম্পায়ার মাল্টিপল রকেট লঞ্চার, ১০টির বেশি বিদেশি কামান এবং অস্ত্রভান্ডার এবং জ্বালানি ডিপো ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী সোইগুকে আরও জানিয়েছেন, রাশিয়ার উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অস্ত্রের কারণে ইউক্রেন এখন মানবশক্তি এবং যুদ্ধাস্ত্রের দিক দিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
ওডেসায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ২০
এদিকে, ইউক্রেনের বন্দর নগরী ওডেসায় জোড়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৭৩ জন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। সামরিক অভিযানের গত দুই বছরে কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী এই শহরটিতে যত আঘাত হেনেছে রুশ সেনারা, সেসবের মধ্যে এটিকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকাল থেকে রাশিয়াজুড়ে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ; ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে ওডেসায়। সেটির আঘাতের পর ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সে সময় দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ে রুশ সেনারা।
সামরিক পরিভাষায় এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে 'ডবল ট্যাপ হামলা' বলা হয়। জরুরি পরিষেবা বিভাগের মুখপাত্র মারিয়ানা অ্যাভেরিনা বলেন, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এই প্রথম ওডেসায় 'ডবল ট্যাপ' হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। তিনি বলেন, 'প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানার পর জরুরি পরিষেবা বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেছিল। সে সময়ই দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে।