ভয়াবহ যুদ্ধের জেরে মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়া গাজা উপত্যকায় ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা পাঠাতে সেখানে অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ করতে যাচ্ছে আমেরিকা। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ ঘোষণা দিয়েছেন। তথ্যসূত্র : বিবিসি
আমেরিকার 'স্টেট অব ইউনিয়ন দিবস' উপলক্ষে মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, 'গাজায় সমুদ্রপথে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সামগ্রী পাঠাতে সেখানে একটি অস্থায়ী বন্দর নির্মাণ করতে যাচ্ছে মার্কিন সেনাবাহিনী। নির্মাণ কাজ শেষ হতে কয়েক সপ্তাহ লাগবে। বন্দরটি ব্যবহার করা হবে শুধু গাজায় ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর জন্য। কোনো সামরিক প্রয়োজনে এটি ব্যবহার করা হবে না।'
ভাষণে ইসরাইলকে 'সতর্কবার্তাও' দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। বলেছেন, 'গাজার যুদ্ধপীড়িত বেসামরিক জনগণের হাতে ত্রাণ তুলে দেওয়া একটি সামষ্টিক দায়িত্ব এবং ইসরাইলকে অবশ্যই তার হিস্যার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। আর সেই দায়িত্ব হলো- গাজায় অধিক হারে ত্রাণ প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো ঝামেলা না করা এবং এই নিশ্চিয়তা দেওয়া যে, ত্রাণকর্মীরা ক্রসফায়ারে প্রাণ হারাবে না। ইসরাইলকে আরেকটি কথা আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই- মানবিক সহায়তা নিয়ে কোনো প্রকার দরকষাকষি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। মানবিক সহায়তা রাজনৈতিক দরকষাকষির অস্ত্র হতে পারে না।'
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরাইলি ও বিদেশি নাগরিকসহ এক হাজার ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরাইলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এত মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরাইল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও। অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৩১ হাজার ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭২ হাজার। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন। এছাড়া ইসরাইলি বাহিনীর বোমায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচু্যত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।