লক্ষ্য ইসরাইলি বন্দিমুক্তি
যুদ্ধবিরতি : জাতিসংঘকে মার্কিন চাপ
গাজায় অপুষ্টি-পানি শূন্যতায় ২০ জনের মৃতু্য
প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
আমেরিকা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া তাদের খসড়া প্রস্তাবের ভাষা সংশোধন করে 'ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় অবিলম্বে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি' করার তাগাদা দিয়েছে। আমেরিকা দুই সপ্তাহ আগে প্রথম গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে এই খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। তখন এই প্রস্তাবে গাজায় হামাস-ইসরাইল লড়াইয়ে সাময়িক বিরতির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার প্রস্তাবটির তৃতীয় সংশোধনীতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের কড়া ভাষার কথারই প্রতিফলন দেখা গেছে। তথ্যসূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আল-জাজিরা
গাজায় হামাসের হাতে বন্দি ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্তির শর্তে আমেরিকা একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের যে কোনো রকম সমর্থন চাইছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করাসহ কয়েকশ' ইসরাইলিকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে যায়। এই জিম্মির সংখ্যা ইসরাইলের হিসাব মতে ২৫৩ জন।
আমেরিকা বরাবরই গাজায় লড়াই বন্ধের ক্ষেত্রে 'যুদ্ধবিরতি' শব্দটি এড়িয়ে এসেছে। নিরাপত্তা পরিষদে আনা তিনটি খসড়া প্রস্তাবে ভেটোও দিয়েছে। এর মধ্যে দু'টি প্রস্তাবনায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছিল। সর্বশেষ প্রস্তাবে ভেটো দেওয়ার পেছনে যুক্তি দিয়ে ওয়াশিংটন বলেছিল, এ প্রস্তাব পাস হলে লড়াই বন্ধ করা এবং জিম্মি মুক্তির জন্য আমেরিকা, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় চলমান আলোচনা ভেস্তে যেতে পারে।
জাতিসংঘে বরাবরই ইসরাইলকে সুরক্ষা দিয়ে আসছে আমেরিকা। তবে গত বছর অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর দু'টি প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে আমেরিকা ভোটদানে বিরত ছিল। ফলে নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ ত্বরান্বিত করার প্রস্তাব পাস হয়েছিল। প্রস্তাবে লড়াইয়ে বিরতি দীর্ঘায়িত করারও আহ্বান ছিল। আর এখন আমেরিকা বলছে, তাদের উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হবে এবং ভোটাভুটির জন্য কোনো তাড়াহুড়া করা হবে না।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে খসড়া প্রস্তাব পাস হতে হলে এর ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে অন্তত ৯টি দেশের সমর্থন লাগবে এবং ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, চীন ও আমেরিকাকে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
গাজায় অপুষ্টি-পানি শূন্যতায় ২০ জনের মৃতু্য
গাজায় অপুষ্টি আর পানি শূন্যতায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের মৃতু্য হয়েছে বলে স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। সেখানে খাবার এবং পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। অবিলম্বে গাজায় আরও ত্রাণ সরবরাহ করা না হলে আরও বহু মানুষ প্রাণ হারাবে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা এক বিবৃতিতে বলেন, অনাহারে কয়েক ডজন মানুষ নীরবে মারা যাচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই হাসপাতালেও আসতে পারছে না।
এদিকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকা গাজার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। গাজায় পূর্ণমাত্রার দুর্ভিক্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার ৭১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৭২ হাজার ১৫৬ জন। গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলের হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন বেসামরিক নাগরিকরা। যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।