ইসরাইলি আগ্রাসন
গাজায় যুদ্ধবিরতির আগে কোনো বন্দি বিনিময় হবে না :হামাস
রমজানের আগে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি না হলে 'খুবই বিপজ্জনক' পরিস্থিতি হবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন
প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ওসামা হামদান বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির পরই কেবল ফিলিস্তিনি বন্দি ও ইসরাইলি জিম্মি বিনিময় ঘটতে পারে।
কায়রোতে হামাস, মিশর ও কাতারের কর্মকর্তাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চলছে, তার মধ্যেই এ কথা বলেছেন হামদান। আলোচনায় কোনো অগ্রগতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে হামদান যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য তার দলের শর্ত ফের উলেস্নখ করেন। এগুলো হলো- ইসরাইলের সামরিক হামলার সমাপ্তি, গাজা ভূখন্ড থেকে ইসরাইলি বাহিনীর প্রত্যাহার এবং গাজার অন্য অংশে পালিয়ে যাওয়া বাস্তুচু্যত ফিলিস্তিনিদের তাদের বাড়িতে ফিরতে দেওয়া।
হামদান বলেন, 'গত দুই দিনে ভ্রাতৃপ্রতিম কাতারি ও মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের রাখা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে হামাস তার অবস্থান জানিয়েছে। যুদ্ধবিরতির জন্য আমরা আমাদের শর্ত ফের নিশ্চিত করেছি: ভূখন্ডটি থেকে (ইসরাইলি বাহিনীর) সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং বাস্তুচু্যতরা যে এলাকাগুলো ছেড়ে গিয়েছিল সেখানে তাদের ফেরত পাঠানো, বিশেষ করে উত্তরে।'
গাজার উত্তরাংশের মানবিক পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। ইসরাইল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও সেখানে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি বাসিন্দা রয়ে গেছে বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে।
২৩ জানুয়ারির পর থেকে গাজার উত্তরাংশে খাদ্য ত্রাণ সরবরাহ করতে পারছে না জাতিসংঘ। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের ত্রাণবহরকে সেখানে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। এর মধ্যে সেখানে জাতিসংঘের একটি ত্রাণবহরে ইসরাইলি সেনারা গুলিবর্ষণ করেছে আর তাতে শতাধিক মানুষের মৃতু্য হয়েছে। শনিবার যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো গাজায় বিমান থেকে খাদ্য ত্রাণ ফেলেছে। তাদের এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলে ওয়াশিংটন জানিয়েছে।
কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে হামদান সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমরা ওয়াশিংটনকে বলি, ত্রাণ পাঠানোর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইসরাইলে তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করা।'
রমজানের আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি চান বাইডেন
এদিকে, পবিত্র রমজানের আগে ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি না হলে 'খুবই বিপজ্জনক' পরিস্থিতি হবে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার বাইডেন এই সতর্কতার কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি গ্রহণের বিষয়টি হামাসের ওপর নির্ভর করছে। মিত্র ইসরাইলকে বাইডেন বলেন, গাজায় আরও সহায়তা পৌঁছাতে না দেওয়া নিয়ে কোনো অজুহাত চলবে না।
ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচারে হামলার মধ্যে থাকা গাজায় দুর্ভিক্ষ আসন্ন বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।
গাজায় ত্রাণের প্রয়োজনীয়তা এবং বেসামরিক মানুষের মৃতু্য সংখ্যা বেড়ে যাওয়া নিয়ে ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হতাশা বাড়ছে। অন্যদিকে, জিম্মিদের মুক্তিসহ যুদ্ধবিরতির শর্তে হামাস রাজি না হওয়ার কারণেও যুক্তরাষ্ট্র হতাশ। এমন প্রেক্ষাপটে বাইডেনের কাছ থেকে এমন বক্তব্য এল। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ক্যাম্প ডেভিড থেকে হোয়াইট হাউসে ফেরার সময় ৮১ বছর বয়সি বাইডেন যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, 'এটা এখন হামাসের হাতে।'