মস্কো আলোচনা
বিরল ঐক্যের ঘোষণা হামাস-ফাতাহর
নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে ব্যস্ত থাকলে কখনো উন্নতি হয় না : ল্যাভরভ
প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
নিজেদের মধ্যে চরম খারাপ সম্পর্ক ভুলে গিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে এক হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ও ফাতাহ। রাশিয়া আয়োজিত এক আলোচনার মধ্য দিয়ে বিরল এই ঐক্যের ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্য দিয়ে নিজেদের মধ্যকার বিভেদ ভুলে এক হওয়ার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে হামাস, ইসলামিক জিহাদ, ফাতাহ ও অন্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো। তথ্যসূত্র : আরব নিউজ, আনাদলু নিউজ
চলমান যুদ্ধে কীভাবে ইসরাইলকে মোকাবিলা করা যায় এবং যুদ্ধের পর কর্মপরিকল্পনা কী হবে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে মস্কোতে। ফিলিস্তিনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ তার পদত্যাগের পর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্যের ডাক দেন। এরপরই মস্কোতে মিলিত হয় গোষ্ঠীগুলো। শুক্রবার ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো মস্কো থেকে এক হয়ে বার্তা দিয়েছে যে, প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) অধীন আবারও একই ব্যানারের নিচে আসছে সবাই। সব পক্ষই এবার ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে একমত প্রকাশ করেছে। যদিও হামাস ও ইসলামিক জিহাদকে সন্ত্রাসী বাহিনী হিসেবে ঘোষণা করেছে আমেরিকা ও তার মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু পিএলও সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেয় তারা।
এর আগেও হামাস ও পিএলওকে একসঙ্গে আনার নানা চেষ্টা ব্যাহত হয়েছে। তবে সর্বশেষ রাশিয়ার উদ্যোগে এই চেষ্টা সফল হলো। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফাতাহ ও হামাসসহ ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সব পক্ষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে রাশিয়া। যদিও ইসরাইলের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক এখন তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। প্রথম থেকেই গাজায় ইসরাইলের বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আসছে রাশিয়া। অপরদিকে, একাধিকবার ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে দেশটি। ইসরাইলের হামলা থামাতে জাতিসংঘে প্রস্তাবও উত্থাপন করেছিল মস্কো।
আলোচনা শুরুর পর গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর সহিংসতার বিরুদ্ধে নিজেদের মধ্যকার যাবতীয় বিভেদ ভুলে সব ফিলিস্তিনিকে এক হওয়ার আহ্বান জানান রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। শুক্রবার মস্কোয় ফিলিস্তিনের একটি রাজনৈতিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের সময় এ আহ্বান জানান তিনি। ল্যাভরভ বলেন, 'সন্দেহাতীতভাবেই, এই ঐক্যের প্রধান উদ্দেশ্য হবে গাজায় রক্তপাত বন্ধ করা। বর্তমানে সেখানে যুদ্ধ-সহিংসতা আমরা দেখতে পাচ্ছি, হয়তো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চেষ্টায় কিছুদিনের জন্য তা বন্ধ থাকবে, তারপর আবার ঘটবে এবং বার বার ঘটবে। এই সংঘাত পুরোপুরি বন্ধ হতে পারে কেবল স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।'
তিনি বলেন, 'কোনো ঘরে যদি একাধিক মতের লোকজন সারক্ষণ নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে ব্যস্ত থাকে, তাহলে সেই ঘর বা পরিবার কখনও উন্নতি করতে পারে না। দুঃখজনক হলেও সত্য, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে সবচেয়ে বড় বাধা এটি।'