মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলের পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই যুদ্ধে ইসরাইল বৈশ্বিক সমর্থন হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে মঙ্গলবার এমন সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার পরপরই নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে খোদ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সমর্থনের দাবি করে মন্তব্য এলো।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু একটি জরিপের কথা উলেস্নখ করেছেন। ওই জরিপ অনুযায়ী ৮০ শতাংশের বেশি আমেরিকান গাজা সংঘাতে ইসরাইলকে সমর্থন করে।
বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু'র মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইলের প্রতি এই ব্যাপক জনসমর্থন তাদের হামাসের বিরুদ্ধে 'সম্পূর্ণ বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত' লড়াই করতে অনুপ্রাণিত করবে।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধবিরতির জন্য সম্ভাব্য চুক্তির ব্যাপারে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, সংঘাতের শুরু থেকেই তাকে একটি প্রচারণায় নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে। যে প্রচারণার মূল লক্ষ্য, 'সময়ের আগেই যুদ্ধের ইতি টানার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ প্রতিহত করা আর ইসরাইলের জন্য সমর্থন আদায়।'
'আমরা এই ক্ষেত্রে উলেস্নখ করবার মতো সফল,' দাবি করে নেতানিয়াহু সাম্প্রতিক হার্ভার্ড-হ্যারিস জরিপ উদ্ধৃত করেন। জানান, সেই জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৮২ শতাংশ আমেরিকান জনসাধারণ ইসরাইলকে সমর্থন করে। তাই 'পূর্ণ বিজয় না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখার শক্তি দেয় এই তথ্য।'
অন্যদিকে 'আগামী সোমবারের মধ্যে' গাজায় ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যকার যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে আশাবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন গত সোমবার এক রকম সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, ইসরাইল সরকার যদি তাদের এই কট্টর অবস্থান থেকে সরে না আসে তাহলে 'বৈশ্বিক সমর্থন হারাতে হতে পারে তাদের।'
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস এবং নর্ক পরিচালিত আরেকটি জরিপে অবশ্য নেতানিয়াহুর দাবির বিপরীত চিত্র দেখা গেছে।
ওই জরিপ অনুযায়ী জানুয়ারিতে প্রায় অর্ধেক মার্কিনি মনে করছেন, 'ইসরাইল বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে।' নভেম্বরে এই হার ছিল ৪০ শতাংশ। অর্থাৎ একই রকম অভিমত পোষণকারীর সংখ্যা বেড়েছে গত দু'মাসে। অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে বলে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস এবং স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে আলোচনার বিষয়বস্তু বা সম্ভাব্য সময়সীমা সম্পর্কে বিশদে জানাতে রাজি হননি তারা।
হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জিম্মিদের গাজা থেকে মুক্ত করে আনা এবং মানবিক সহায়তার অনুমতি দিতে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে 'উলেস্নখযোগ্য অগ্রগতি' হয়েছে গত সপ্তাহে।
তিনি বলেন, আমরা এই সপ্তাহে সেই অগ্রগতিকে ভিত্তি করেই চুক্তিটি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। প্রেসিডেন্ট এবং অন্য কর্মকর্তারা ওই অঞ্চলের অংশীদারদের সঙ্গে দিন-রাত যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
'কিন্তু, প্রেসিডেন্ট বলার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কোনো চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি, এটা ঠিক। আরও অনেক কাজ করার বাকি আছে।'
কিরবি বলেন, যুদ্ধে ছয় সপ্তাহের একটা বিরতি পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তারা। আগের বিরতিগুলোর তুলনায় সময়টা বেশ দীর্ঘ। এটি আগামীতে আরও কোনো কার্যকর পথের সন্ধান দিতে পারে। যার ফলে হয়তো সংঘাত অবসানের একটি উপায় মিলে যাবে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন, দেশটির কূটনীতিকরা কাতার, মিশর ও ইসরাইলের সঙ্গে কাজ করছেন।