মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
রুশ সেনা অভিযান

রাশিয়ার হামলায় আরেক এলাকা হাতছাড়া ইউক্রেনের

ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না :ম্যাখোঁ
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
আভদিভকা দখলের পর উচ্ছ্বাস রুশ সেনাদের

ম যাযাদি ডেস্ক

রাশিয়ার প্রবল আক্রমণে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের আরেকটি এলাকা হাতছাড়া হয়েছে। ইউক্রেন সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র সোমবার জানিয়েছেন, লাস্তোককাইন গ্রাম থেকে সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। যুদ্ধের তৃতীয় বছরের শুরুতে যুদ্ধক্ষেত্রে জনবল ও অস্ত্রশস্ত্রে রুশ বাহিনী অনেক এগিয়ে রয়েছে। তথ্যসূত্র : এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ, এপি

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র দিমিত্রো লাইখভি জাতীয় টেলিভিশনে বলেন, কিয়েভের সেনারা সর্বশেষ ধাক্কা খেয়েছে লাস্তোককাইন গ্রামে। সেখান থেকে পিছু হটে তারা আশপাশের গ্রামে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।

দোনেৎস্ক শহরের কাছে আভদিভকা শহরতলীর পশ্চিমে রয়েছে লাস্তোককাইন। চার মাসব্যাপী যুদ্ধের পর ১৮ ফেব্রম্নয়ারি এই শহরতলী দখল করে নিয়েছিল রাশিয়ার বাহিনী। মস্কোর শক্তিধর সামরিক বাহিনীর কাছে পরাস্ত হয়েছিল সেখানকার রক্ষীরা এবং ইউক্রেন তাদের সেনা প্রত্যাহার করে অন্যত্র প্রতিরক্ষা স্থাপনের পথ বেছে নিয়েছিল।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা 'আরআইএ নভোস্তি' স্থানীয় কমান্ডার আন্দ্রেই মর্দভিশেভ বলেছেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের বাহিনীকে ১০ কিলোমিটার পেছনে পিছু হটতে বাধ্য করেছে এবং তারা তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে। ওই সংবাদ সংস্থা বলেছে, ইউক্রেনের এক গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ রুট লাস্তোককাইনের মধ্য দিয়ে গেছে।

এই গ্রাম হারানো ইউক্রেনের জন্য যদিও বড় ক্ষতি নয়। তবু গ্রাম পরিত্যাগ করা থেকে আন্দাজ করা যায়, যুদ্ধের ময়দানে ইউক্রেন বর্তমানে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। যুদ্ধের নতুন পর্বে ইউক্রেনের অবস্থা বেশ হতাশাজনক। ইউক্রেন জানিয়েছে, সেনা ও সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও মস্কোর সেনা বাহিনী উন্নত আগ্নেয়াস্ত্রের সাহায্যে অগ্রসর হচ্ছে এবং একাধিক মফস্বল ও শহর গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।

পশ্চিমা বিশ্লেষকরা বলেছেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চারটি সমান্তরাল অক্ষ বরাবর রুশ সেনারা জোরালো আক্রমণ করছে। তাদের লক্ষ্য, ইউক্রেন-নিয়ন্ত্রিত দোনেৎস্ক অঞ্চলের পশ্চিমাংশের আরও অভ্যন্তরে প্রবেশ করা এবং এর উত্তরে অবস্থিত খারকিভ অঞ্চলে ঢুকে পড়া।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলে মস্কো-নিযুক্ত কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, রুশ সেনাবাহিনী আমেরিকার তৈরি করা এক আব্রামস ট্যাংক ধ্বংস করেছে। আরআইএ নভোস্তি বলছে, গত শরতে ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে মোতায়েনের পর এই প্রথম একটি আব্রামস ট্যাংক ধ্বংস করা হলো। রাশিয়া সোমবার ভোরে ইউক্রেনে সাতটি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৪টি 'শাহেদ' ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী বলেছে, তারা ৯টি ড্রোন ও তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে।

ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর বিষয়টি উড়িয়ে

দেওয়া যায় না :ম্যাখোঁ

রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত করতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁ ইউরোপের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের সহায়তার সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিতে প্রস্তুত নন। এমনকি প্রয়োজনে সেনাবাহিনী পাঠানোর কথাও বলেছেন তিনি। সোমবার প্যারিসে ইউক্রেন সংক্রান্ত ইউরোপীয় সম্মেলনে উপস্থিত ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর ম্যাখোঁ যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার আরও কড়া অবস্থানের উলেস্নখ করেন। তার মতে, এমন অবস্থায় ইউরোপের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে রাশিয়ার পরাজয় অপরিহার্য। শুধু ইউক্রেন নীতির কারণে নয়, সার্বিকভাবে রাশিয়ার আগ্রাসী মনোভাব বেড়ে চলেছে বলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মন্তব্য করেন।

রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনের সহায়তা সম্পর্কে ইউরোপে নীতিগত ঐকমত্য থাকলেও খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর প্রশ্নে মতপার্থক্য রয়েছে। যেমন আমেরিকার ঠিক পরেই জার্মানি সে দেশকে সবচেয়ে বেশি সামরিক সহায়তা দিলেও সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে নারাজ। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সম্প্রতি ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠানোর বিষয়ে নিজের দ্বিধার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে