হামাস-ইসরাইল সংঘাত
গাজায় শিগগিরই যুদ্ধবিরতি :বাইডেন
সোমবারের মধ্যে চুক্তির ঘোষণা আসার কথা, যুদ্ধবিরতির খসড়া খতিয়ে দেখছে হামাস
প্রকাশ | ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
যাযাদি ডেস্ক
হামাস ও ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি খুব কাছাকাছি বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে যা কার্যকর হতে পারে। সোমবার দেশটির নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের প্রধান শহর নিউইয়র্ক সিটিতে 'পিকক নেটওয়ার্ক'র সদর দপ্তরে বাইডেনকে যখন প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি আইসক্রিম হাতে দাঁড়িয়েছিলেন। যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে বাইডেনের এই মন্তব্যকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। যুদ্ধবিরতি কখন কার্যকর হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন আইসক্রিম হাতে বলেন, 'আশা করছি, এই সপ্তাহের শেষের দিকে হামাস ও ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।' তথ্যসূত্র : এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স, আল-জাজিরা
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, 'আমার জাতীয় নিরাপত্তা-বিষয়ক উপদেষ্টা আমাকে জানিয়েছেন, আমরা গাজায় পরবর্তী একটি যুদ্ধবিরতির বেশ কাছাকাছি রয়েছি। আশা করছি, আগামী সোমবারের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসবে।'
সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আসন্ন রমজানে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ রাখতে ইসরাইলি বাহিনী সম্মত হয়েছে এবং তিনি আশা করছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই গাজায় দ্বিতীয় দফা যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
গত সপ্তাহে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বৈঠক করেছেন ইসরাইল, কাতার, মিসর ও মার্কিন কর্মকর্তারা। সেই বৈঠক শেষে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস এবং ইসরাইলি প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন মিসর ও কাতারের কর্মকর্তারা। সেই আলোচনার সূত্র ধরে সম্প্রতি মিসরের একাধিক সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি জানিয়েছে, আসন্ন রমজান মাসের আগেই গাজায় দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসতে পারে। আগামী মার্চের ১১ কিংবা ১২ তারিখ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছরের রমজান মাস। গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস এবং ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে প্রথম বিরতিটি ছিল গত নভেম্বরের ২৫ তারিখ থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব
খতিয়ে দেখছে হামাস
এদিকে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে ৪০ দিন যুদ্ধবিরতির একটি খসড়া প্রস্তাব দিয়েছে মধ্যস্থতাকারী দুই দেশ কাতার ও মিসর। প্রস্তাবটি হামাসের নেতারা পর্যালোচনা করছেন বলে জানা গেছে। প্রস্তাবিত এই খসড়ায় ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি গাজার হাসপাতাল-রুটি-বিস্কুট-কেক তৈরির কারখানাগুলোর পুনর্গঠন ও নির্মাণ, প্রতিদিন উপত্যকায় ত্রাণবাহী ৫০০টি ট্রাকের প্রবেশ এবং গৃহহীন ফিলিস্তিনিদের জন্য কয়েক হাজার তাঁবু পাঠানোর মতো বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এসবের পরিবর্তে নিজেদের কব্জায় থাকা জিম্মিদের মধ্যে থেকে নারী, ১৯ বছরের কম বয়সি কিশোর-কিশোরী, বয়স পঞ্চাশের বেশি বয়স্ক ব্যক্তি এবং অসুস্থ- এমন ৪০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে হামাসকে।
গাজায় মৃতু্যর মিছিল থামছেই না
অন্যদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা যখন জোরেশোরে আলোচিত হচ্ছে, তখন ফিলিস্তিনি উপত্যকায় ইসরাইলি তান্ডব আরও বেড়েছে। অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানে তিনজন নিহত এবং আর তিনজন আহত হয়েছে। ফারা শরণার্থী শিবিরেও তীব্র লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল। সেখানে সংঘাত শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৯ হাজার ৭৮২ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ৭০ হাজার ৪৩ জন।